কথিত আছে, মাছে ভাতে বাঙালি। তবে বাঙালিদের ডাল ছাড়া একবেলা ভাত মুখে উঠে না। ডাল ভাত খাওয়ার মতো শান্তি বাঙালি হয়তো পোলাও বিরিয়ানিতেও খুঁজে পায় না। পাতের শেষবেলায় ডাল ভাত সঙ্গে একটুকরো লেবু হলে সোনায় সোহাগা।
ডাল শুধু যে খেতে ভালো তাই নয়, এটা কিন্তু শরীরের জন্য একটা আস্ত পুষ্টির খনি! ভাবুন তো, ফাইবার, প্রোটিন, আয়রন – এমন কী নেই এতে? যারা মাছ, মাংস বা ডিম খান না, তারাও শুধু ডাল খেয়েই শরীর ঠিকঠাক রাখতে পারেন। নিয়মিত ডাল খাওয়া মানেই পেট ভরে খাবার, আর সঙ্গে ফিটনেসের নিশ্চয়তা!
কোন রোগে কোন ডাল সবচেয়ে উপকারী
মুগডাল: মুড়িঘন্টের কথা উঠলেই যেটা মাথায় আসে, তা হল মুগডালের ঘ্রাণ আর স্বাদ! এই ডাল কিন্তু শুধু রান্নায় স্বাদ বাড়ায় না, শরীরের জন্যও ভীষণ উপকারী। তবে মজার বিষয় হল, অনেকেই ঠিক চিনতে পারেন না মুগডালটা কেমন দেখতে। ছোট ছোট হলুদ রঙের দানাগুলোই হচ্ছে মুগডাল – রান্নাঘরের একেবারে চুপচাপ সুপারহিরো!
মুগডাল খাওয়ার বেশ কিছু দারুণ উপকারিতা আছে। অনিদ্রা কমাতে সাহায্য করে, শরীরের দুর্বলতা দূর করে, এমনকি জন্ডিসের ঝুঁকিও কমায়। মানে একদম ভিতর থেকে শরীরকে চাঙ্গা রাখে এই ডাল।
তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে—যাদের গ্যাসের সমস্যা আছে, তারা যদি ঘন ঘন মুগডাল খান, তাহলে একটু সমস্যা হতে পারে। কারণ এই ডাল হজম হতে সময় নেয়।
মসুর ডাল: সুর ডাল আমাদের রান্নাঘরের খুব চেনা একটি উপাদান। আর এই ছোট্ট ডালেই লুকিয়ে আছে দারুণ সব পুষ্টিগুণ। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে। বিশেষ করে যদি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে, তাহলে নিয়মিত মসুর ডাল খাওয়া বেশ উপকারি হতে পারে।
তবে একটা কথা মাথায় রাখা জরুরি—চিকিৎসকরা প্রতিদিন মসুর ডাল খাওয়ার পরামর্শ দেন না। কারণ, অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরের হরমোনের স্বাভাবিক ভারসাম্যে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এছাড়া যাঁদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য মসুর ডাল একেবারে এড়িয়ে চলাই ভালো।
ছোলার ডাল: লুচির সঙ্গে ছোলার ডালের যুগলবন্দি কালজয়ী। অনেকে আবার ওজন কমাতে ছোলার ডাল খেয়ে থাকেন। এতে থাকা ফাইবার বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে হজমশক্তি সমস্যা থাকলে এ ডাল বেশি খাওয়া যাবে না।