HS Exam 2025: এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে চলেছেন প্রায় ৫ লক্ষ ৯ হাজার শিক্ষার্থী, যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কম। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। তুলনামূলকভাবে দেখতে গেলে, ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪২৮ জন। তার মধ্যে থেকে একাদশের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার জন। কিন্তু এই বছর পরীক্ষা দিচ্ছে ৫ লক্ষ ৯ হাজার পরীক্ষার্থী। অর্থাৎ, প্রায় ৫৫ হাজার পরীক্ষার্থী কম। মানে আবারও সেই ড্রপআউট। প্রতি বছর মাধ্যমিকের উত্তীর্ণের সংখ্যার থেকে প্রায় ১০ শতাংশ পড়ুয়া কম রেজিস্ট্রেশন করছে উচ্চ মাধ্যমিকে।
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিকে (HS Exam 2025)পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমার পিছনে মূলত দুটি বড় কারণ রয়েছে। প্রথমত, ক্লাস ইলেভেনে রেজিস্ট্রেশনের সময় এবং একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর অনেক শিক্ষার্থীই চাকরির দিকে ঝুঁকে পড়েন। বিশেষ করে যারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে চান, তারা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে কাজের সুযোগ খুঁজতে থাকেন। দ্বিতীয়ত, একাংশ শিক্ষার্থী মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে দেন, অর্থাৎ স্কুলছুট হয়ে যান। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।
অনেক পড়ুয়া আবার ইঞ্জিনিয়ারিং বা অন্যান্য বিভাগের পড়াশোনা শুরু করে দেন। এই শেষ বছর পরীক্ষার্থীরা রেগুলার ভিত্তিতে উচ্চমাধ্যমিক (HS Exam 2025) পরীক্ষা দিচ্ছে। ফলের, পরের বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক হবে সেমিস্টার পদ্ধতিতে। এমনকি, চলতি বছর থেকেই অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষা কেন্দ্রের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে। গত বছর অনেক পরীক্ষার্থী ভুল পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে গিয়েছিলেন, যার ফলে চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এই নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে পরিবর্তন এখানেই শেষ নয়! আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম আনা হয়েছে—যে ঘরে যতজন পরীক্ষার্থী থাকবে, সেই সংখ্যার ভিত্তিতেই সেই ঘরেই প্রশ্নপত্র খোলা হবে।
অর্থাৎ, সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হলেও, ৯টা ৫৫ মিনিটেই পরীক্ষার্থীদের সামনে প্রশ্নপত্র খোলা হবে, যাতে সবকিছু স্বচ্ছ থাকে। নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি প্রশ্নপত্রে থাকবে ইউনিক সিরিয়াল নম্বর। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশ্নপত্রে QR কোড ও বারকোডও সংযুক্ত থাকবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢোকা একেবারেই নিষিদ্ধ! কেউ যাতে গোপনে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। তবে শুধু এটুকুই নয়! নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে একটি গোপন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় ও যেখানে প্রশ্নপত্র রাখা থাকবে, সেখানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (CCTV) বসানো হয়েছে।
এদিকে ৫ লক্ষ ৯ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। ৪৫.৩২ শতাংশ ছেলে এবং ৫৪.৬৮ শতাংশ মেয়ে। ছাত্রদের থেকে ছাত্রীর সংখ্যা ৪৭৬৭১ জন বেশি। মোট ২৩টি জেলায় ২০৮৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ৫২৮ জন বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থী রাইটার এবং অতিরিক্ত সময় সহ পরীক্ষা দিচ্ছেন। এছাড়া ১৩৬টি কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসেবে ধরা হয়েছে। প্রতি ২৫ জন পড়ুয়া পিছু এক =জন করে পরিদর্শক রাখা হচ্ছে।