বাংলায় জঙ্গিবাদ প্রচার নিয়ে এবার বড় অভিযোগ উঠে এল খবরের শিরোনামে। নেপথ্যে রয়েছে রয়েছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন (JMB)। অভিযোগ উঠেছে যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় প্রথার আড়ালে, আসলে একটি বড় সন্ত্রাসী পরিকল্পনার ছক রচনা হয়েছে। যার মাধ্যমে তরুণদের মগজধোলাই করে জঙ্গি পথে প্রচার করবে। আর এমনই একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্প্রতি সামনে আসায় রীতিমত আতঙ্কে ভুগছে মুর্শিদাবাদ সহ পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চল।
গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—বাংলাদেশের এক কুখ্যাত জঙ্গি নেতা মুর্শিদাবাদে অনুপ্রবেশের ছক কষছে। তবে তার লক্ষ্য শুধুমাত্র দেশে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করা নয়, বরং আরও গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে, যুব সমাজকে মগজধোলাই করে জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট করাই তার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। বিশেষ সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই জামাত-উল-মুজাহিদিন নেতার পরিচিত নাম ইসমাইল। কিন্তু, এটি তার প্রকৃত পরিচয় নয়। ইতিমধ্যেই গোয়েন্দারা তার আসল নাম ও পরিচয় জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ইসমাইল নামে পরিচিত এই ব্যক্তি বাংলাদেশে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে এসেছে এবং এখন ভারতেও নিজের কার্যক্রম বিস্তার করার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশে জঙ্গিদের মুক্তাঙ্গন অবস্থান
গোয়েন্দা সূত্রে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে—বিশেষত মুর্শিদাবাদে ইসমাইলের বেশ কয়েকটি স্লিপার সেলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এই স্লিপার সেলগুলোর মাধ্যমেই সে মুর্শিদাবাদে গোপনে প্রবেশ করে তিনটি নির্দিষ্ট জায়গায় নতুন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ছক কষেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্থানীয় ছাত্রদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আড়ালে প্রভাবিত করে জঙ্গিবাদের দিকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, এর আগেও ইসমাইল বাংলাদেশের রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ-সহ বিভিন্ন জেলায় তার ঘাঁটি তৈরি করেছিল। তবে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে এখন জঙ্গিদের জন্য আগের মতো নিরাপদ আশ্রয় নেই। তাই এবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাকে টার্গেট করে সদস্য নিয়োগের পরিকল্পনা করছে তারা। গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই ইসমাইলের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখছে এবং তার ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সক্রিয় হয়েছে।
গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদের অন্তত ২০ জন তরুণকে টার্গেট করা হয়েছে এবং তাদের মগজধোলাইয়ের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের পথে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে, ভিপিএন কল ও কিছু নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকেই এই জঙ্গি নেতা মুর্শিদাবাদের অন্তত তিনজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছে। তবে, ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই এই পুরো নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং অসম পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম তথা ভারতীয় আল কায়েদা (আকিস)-এর বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র (জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ) সরাসরি যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। যা তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। নিরাপত্তা বাহিনী এখন জঙ্গি মডিউল গুঁড়িয়ে দিতে আরও জোরদার অভিযান চালাচ্ছে।