যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর গাজায় আবারও ভয়ংকর রূপে ফিরে এসেছে সংঘাত। এবার যেন আগের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে ইসরায়েলের হামলার ভয়াবহতা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে ঘরবাড়ি, হারিয়ে যাচ্ছে নিরীহ প্রাণ।
স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা বলছেন, “এবার যদি বিশ্ব এগিয়ে না আসে, তাহলে আমাদের আর বাঁচার কোনো আশাই নেই।” কথাগুলো শুধু হতাশা নয়, এক চরম অসহায়তা আর বেঁচে থাকার আর্তি। এই ভয়াবহ বাস্তবতার প্রতিধ্বনি মিলেছে সোমবার (৭ এপ্রিল) জাতিসংঘ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েল সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করার পর থেকে গাজা উপত্যকায় প্রায় ৪ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।
গাজার পরিস্থিতি এখন এমন এক ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে প্রতিটি দিনই বয়ে আনছে নতুন মৃত্যু আর কান্না। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমাদের মানবিক সহকর্মীরা জানিয়েছেন—গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলা এখনও থামেনি। প্রতিদিনই ঘটছে ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা।”
সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, এই সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশুরা। অনেকেই নিহত হয়েছে, কেউ আহত, আবার কেউ হয়তো আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গাজাজুড়ে বেঁচে থাকা মানুষদের বারবার বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে। এমন এক সংকুচিত স্থানে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে যেখানে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা অসম্ভব।
গত ২ এপ্রিল, গাজা উপত্যকার উত্তরে ঘটে গেল আরেকটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকে ইসরায়েল চালায় ভয়াবহ বিমান হামলা।
সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয় হলো—এই হামলার আগে কোনো ধরনের সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়নি। মানুষজন তখন চিকিৎসার জন্য ক্লিনিকটিতে ভিড় করেছিলেন, কেউ ছিলেন অসুস্থ, কেউ আহত, কেউবা স্রেফ আশ্রয়ের খোঁজে। কিন্তু এক মুহূর্তেই সবকিছু বদলে গেল।
এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২২ জন নিরীহ ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং বৃদ্ধরাও ছিলেন—যাঁরা কোনোভাবেই সংঘাতে জড়িত নন।