রূপশ্রী প্রকল্প ২০২৫: মেয়ের বিয়েতে এককালীন ২৫,০০০ টাকার অনুদানপশ্চিমবঙ্গ সরকারের এক মানবিক ও সহানুভূতিশীল উদ্যোগের নাম “রূপশ্রী প্রকল্প” (Rupashree Prakalpa)। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো সমাজের দরিদ্র ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েদের বিয়ের সময় একটু ভরসা দেওয়া – যেন অর্থের অভাবে কোনও মেয়ে আর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সমস্যায় না পড়ে। এই প্রকল্পের আওতায়, যারা নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে, তাদের মেয়ের বিয়ের জন্য এককালীন ২৫,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।
রূপশ্রী প্রকল্প ২০২৫
রূপশ্রী প্রকল্প ২০২৫ কী?
আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়ের বিয়েতে যাতে টাকার সমস্যা না হয়, তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার এককালীন ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে থাকে। এই টাকা সরাসরি মেয়ের (পাত্রীর) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
রূপশ্রী প্রকল্পের (Rupashree Prakalpa) উদ্দেশ্য
রূপশ্রী প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই হলো — আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ের সময় পাশে দাঁড়ানো। অনেক সময়ই শুধু টাকার অভাবে একটা পরিবারের মাথায় চাপ নেমে আসে, আর বিয়ের মতো বড় দায়িত্ব তখন আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সরকার চায়,
- মেয়ের বিয়ের খরচ যাতে গরিব পরিবারগুলোর জন্য বোঝা না হয়ে দাঁড়ায়,
- বিয়ের সময় যেন পরিবারের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ না পড়ে,
- এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, টাকার অভাবে যেন কোনও মেয়ের বিয়ে আটকে না যায় — সেটাই নিশ্চিত করা।
রূপশ্রী প্রকল্প কবে চালু হয়?
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ সালের ১লা এপ্রিল রুপশ্রী প্রকল্প চালু করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়ের বিয়েতে দরিদ্র পরিবারকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা।
রূপশ্রী প্রকল্পে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- আবেদনকারী মেয়ে (পাত্রী) ও ছেলের (বরের) উভয়েরই বয়সের প্রমাণ পত্রঃ- মাধ্যমিক এডমিট কার্ড/ জন্মের শংসাপত্র / ভোটার কার্ড / প্যান কার্ড / আধার কার্ড ইত্যাদি নথির জেরক্স।
- পাত্র ও পাত্রীর পাসপোর্ট সাইজের কালার ফটো, সিঙ্গেল ফটো।
- পাত্র ও পাত্রীর বসবাসের প্রমাণপত্র।
- পাত্র ও পাত্রীর আধার কার্ড।
- আবেদনকারী পাত্রীর পরিবারের ইনকাম সার্টিফিকেট।
- আবেদনকারী মেয়ের ব্যাঙ্ক পাশবই এর জেরক্স
- আবেদনকারী পাত্রীর এটাই প্রথম বিবাহ, এই মর্মে একটি স্ব ঘোষনা পত্র।
- বিবাহের প্রমাণ (নিমন্ত্রণ পত্র/স্বঘোষণা)
রূপশ্রী প্রকল্প ২০২৫ আবেদনের যোগ্যতা
🔸 পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে:
আবেদনকারী নিজে যদি পশ্চিমবঙ্গে জন্মে বড় হয়ে থাকেন বা অন্তত গত ৫ বছর ধরে এখানেই থাকছেন, তাহলে তিনি যোগ্য। আবার, যদি আবেদনকারীর পিতা বা মাতা পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হন, তাহলেও আবেদন করা যাবে।
🔸 অবিবাহিতা হতে হবে এবং এটি হতে হবে প্রথম বিয়ে:
আবেদনকারী মেয়েটির আগে কোনও বিয়ে হয়ে থাকলে এই প্রকল্পে আবেদন করা যাবে না। একমাত্র প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রেই এই সাহায্য দেওয়া হয়।
রূপশ্রী প্রকল্পের ফর্ম কোথায় পাওয়া যায়?
রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কোনো টাকা-পয়সা লাগবে না—আবেদন ফর্ম একেবারে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। কোথা থেকে ফর্ম সংগ্রহ করবেন, সেটা নির্ভর করে আপনি কোথায় থাকেন তার ওপর।
🔸 গ্রামে থাকলে – আপনার এলাকার BDO অফিস (ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার) থেকে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে পারবেন।
🔸 পৌর এলাকায় থাকলে – আপনার এলাকার SDO অফিস (এসডিও অফিস) থেকে ফর্ম নিতে পারবেন।
🔸 মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকায় (যেমন বড় শহর) – সেক্ষেত্রে আপনাকে যেতে হবে পৌর কমিশনার অফিসে, সেখান থেকেই রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন ফর্ম পাবেন।
রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন ফর্ম কোথায় জমা করবো?
রুপশ্রী প্রকল্পের আবেদন ফর্ম সঠিক ভাবে ফিলাপ করে, এরপর সমস্ত ডকুমেন্টস একসঙ্গে করে আবেদনকারী গ্রামাঞ্চলের বসবাসকারী হলে BDO অফিস, আর পৌর এলাকায় বসবাস করলে SDO অফিস এবং আবেদনকারী যদি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন এলাকার বাসকারী হয়ে থাকে, তাহলে পৌর কমিশনার অফিসে আবেদন ফর্ম জমা করবেন।