World Digestive Health: বাঙালিদের মধ্যে হজমজনিত সমস্যা অনেকেই ভোগেন। এজন্য অনেকেই নিয়মিত অ্যান্টাসিড খেয়ে থাকেন। তবে শুধু ওষুধ খেলে সমস্যা পুরোপুরি ঠিক হবে না। সুস্থ থাকতে হলে লাইফস্টাইলেও কিছু পরিবর্তন আনতে হয় — এমনটাই মনে করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ আশিস মিত্র।
তিনি বলেন, ‘প্যাংক্রিয়াস থেকে খাবার হজমে সাহায্যকারী উৎসেচক যদি ঠিকমত না বের হয়, তাহলে হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা স্টুল টেস্টে ধরা পড়ে। তখন ডায়জেস্টিভ এনজাইম সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। তাছাড়া, অনেকের অন্ত্রে একাধিক সমস্যা থাকতে পারে। পাশাপাশি পাকস্থলীতেও বেশি অ্যাসিড তৈরি হলে হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এসব কারণে ওষুধের পাশাপাশি লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি।’ তাই আর সময় নষ্ট না করে দ্রুত কিছু লাইফস্টাইল বদল সম্পর্কে জেনে নিন, যেগুলি হজমশক্তি বাড়াতে পারে।ফ্যাটের থেকে দূরে থাকুন
ডাঃ মিত্র বলেন, ‘যে কোনও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার হজম করতে সবথেকে বেশি সময় লাগে। তাই তেল ও ফ্যাট সমৃদ্ধ যে কোনও খাবার যেমন ফাস্ট ফুড ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এমনকী খাওয়া যাবে না পাঁঠার মাংস। কারণ, এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। তার বদলে বাড়ির তৈরি হালকা খাবার খান। তাহলেই উপকার মিলবে হাতেনাতে। দেখবেন গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা কমবে। বাড়বে হজমশক্তি।’ (ছবি: পিক্সেলস)
World Digestive Health:
সহ্য না হলে এড়িয়ে চলুন
অনেকের পেটে গমের গ্লুটেন ভালোভাবে হজম হয় না। তাই গম থেকে তৈরি রুটি, পাউরুটি, পরোটা বা লুচি খেলে অনেকেই অসুবিধায় পড়তে পারেন। এমন হলে এগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো। এতে আপনার পেট ভালো থাকবে।
আর দুধেও এমন কিছু উপাদান থাকে যাকে ল্যাকটোজ বলে, যা অনেকের পেটে সমস্যা করতে পারে। যদি আপনারও তেমন সমস্যা থাকে, তাহলে দুধ এড়িয়ে চলুন। তার বদলে দই খেতে পারেন। দই খেলে পেট ভালো থাকে এবং সমস্যাও কম হয়—এ কথা জানিয়েছেন ডাঃ মিত্র।
এক্সারসাইজ হল মাস্ট
অলস জীবনযাপন করলে পেটের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, আর খাবারও ঠিক মতো হজম হয় না। তাই ডাঃ মিত্র সবাইকে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছেন। সাথে তিনি বলছেন, খাবার খাওয়ার পরে প্রায় ১০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করাও খুব দরকার। এই সহজ নিয়ম মেনে চললে পেটে ভালো পরিমাণ উৎসেচক তৈরি হয়, যা খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে এবং অনেক ধরনের পেটের সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
৭ ঘণ্টা শান্তির ঘুম চাই
আপনি কি প্রতিদিন পর্যাপ্ত সময় ঘুমান না? তাহলে যে সাবধান হতে হবে। কারণ, এর থেকে অন্ত্রের হাল বিগড়ে যেতে পারে। খাবার হজমে হতে পারে সমস্যা। তাই এই সমস্যা থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিদিন মোটামুটি ৭ ঘণ্টা ঘুমাতে শান্তির ঘুম চাই। সেটা নিশ্চিত করতে রোজ একই সময়ে শুতে যান। পাশাপাশি রাতে মোবাইলের ব্যবহার কম করুন। ব্যাস, তাহলেই উপকার মিলবে হাতেনাতে। দেখবেন চোখে ধরা দেবে ঘুম পরীরা।
স্ট্রেস নেবেন না
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার সঙ্গে অনেক শারীরিক সমস্যা জড়িত থাকে। স্ট্রেসের কারণে হজমশক্তিও ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। তাই যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তা কমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত যোগব্যায়াম, প্রাণায়াম এবং মাইন্ডফুলনেসের অভ্যাস আপনাকে সাহায্য করবে। পাশাপাশি মনকে বর্তমানে রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিন।