Healthy Lifestyle Bangla:শরীর চর্চাকে যেমন অনেকে বিশেষ গুরুত্ব দেন, ঠীক তেমুন মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও ব্যায়ামের মত নিয়মিত কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
শরীরে অসুখ বাঁধলে যত সহজে আমরা ধরে ফেলি , অন্য দিকে মানসিক অসুখ ততটাই আড়ালে থেকে যায়। মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতা জীবন ও জীবিকার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি চাপহীন ও রোগহীন সুখী জীবনের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার বিকল্প আর কিছু নেই।
জিনগত দিক থেকে কোনো কোনো সময়ই আমরা দেখে থাকি মানসিক সমস্যা। আবার অন্য দিকে জীবন যাপনে চাপ, ঘুম, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত আলো ও যত্নের অভাব কারণে মানসিক অসুস্থতা দেখা দেয়। আপনি হয়তো ভাবছেন নিয়মিত যোগব্যায়াম করে, হাঁটাহাঁটি করে, খাদ্য তালিকার শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্য সুরক্ষা করবেন। কিন্তু যদি হঠাৎ বলা হয় যে, কষ্ট করে অতো কিছু করার দরকার নেই বরং একটা মাত্র কাজ করলেই চলবে। তাহলে আপনি কী করবেন?
Table of Contents
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়(Healthy Lifestyle Bangla)
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়: আজে আমরা মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় গুলি জেনে নেবো। মনের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে শরীরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাধারণত আমরা শরীরের অসুখ টের পেলেও নিজের মনের অসুখ টের পাই না। এ কারণে অনেকেই মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পরি, এজন্য ফিট ও সুস্থ থাকতে অবশ্যই মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যত্ন নেওয়া জরুরি। তবে কর্মব্যস্ত জীবনে এই সময়ই আভাব। এ কারণেই মানুষের মধ্যে চাপ ও উদ্বেগ বাড়ছে।
দীর্ঘদিন এভাবে থাকতে থাকতে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। সম্প্রতি ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকেয়েট্রিতে প্রকাশিত ‘কান্ট্রি পেপার অন মেন্টাল হেলথ-বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের ১৮.৭ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, মহামারি করোনার কারণে এই মানসিক রোগের ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজেকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার দায়িত্ব কিন্তু আপনারই। তাই মানসিক রোগ যেন বাসা না বাঁধে সেদিকে সময় থাকতে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ১০ উপায় মেনে চলুন-
- রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
- অ্যালকোহল, ধূমপান ও মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে
- শরীরচর্চা আবশ্যক
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য কি কি করা উচিত?
- ১. সঠিক সময় সঠিক খাবার খাওয়া
- ২. সবজি ও ফলমূল খাওয়া৩. প্রতিদিন পর্যন্ত পরিমাণে পানি পান করুন
- ৪. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম ও বিশ্রাম করুন
- ৫. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
- ৬. প্রতিদিন পর্যাপ্ত আলো বাতাস গ্রহণ করুন
- ৭. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়মিত চেকআপ করুন
- 8. সারাদিনে অন্তত পাঁচটি সবজি আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন।
শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়: মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হোলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। কারণ যত বেশি আপনি শরীরচর্চা করবেন, মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থগুলোও বেড়ে যাবে। যা মেজাজ ভালো রাখতে সহায়তা করবে। অন্যদিকে শরীরচর্চার না করলে মেজাজ খারাপ হতে পারে।
যার কারণে, চাপ, ক্লান্তি ও অলসতা বোধ করতে পারেন। তাই শরীর ও মন দু’টোই ভালো রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও কায়িক পরিশ্রম করেও সুস্থ থাকতে পারবেন।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিয়মিত কি করা দরকার?
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিয়মিত কিছু অভ্যাস তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো যা আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে:
1.সুষম খাদ্য গ্রহণ: প্রতিদিন সুষম খাদ্য আহার করুণ। যেমণ প্রোটিন, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ যুক্ত খাদ্য রাখুন। অন্যদিকে সবজি, ফল, গোটা শস্য, মাছ, মাংস ও দুধ জাতীয় খাবার খান।
2.নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। বেশী করে হাঁটা, দৌড়ানো, যোগব্যায়াম, ইত্যাদি শারীরিক ক্রিয়াকলাপ সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
3. প্রতিদিন পর্যাপ্ত জল পান করুন: দিনে কম করে ৮ গ্লাস পানি পান করুন। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং কীডণী পড়োব্লেম থেকে দূরে রাখে।
4. পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের কারণে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। ঘুম মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এই রাসায়নিকগুলো আমাদের মেজাজ ও আবেগ পরিচালনা করে।
5. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: আপনার যা ভালো লাগবে বা করতে ইচ্ছে করবে তা-ই করুন। আপনার যদি ঘুরতে যেতে, শপিং করতে কিংবা ছবি আঁকতে ভালো লাগে তাহলে তা-ই করুন।
6. পর্যাপ্ত বিশ্রাম: কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছোট বিরতি নিন। টানা এক ভাবে কাজ করলে শরীর ক্লান্তি এবং মানসিক চাপ বাড়তে পারে।
7. সামাজিক সংযোগ বজায় রাখুন: পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান। সুস্থ মানসিক অবস্থার জন্য সামাজিক সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।অন্যদের সঙ্গে মাত্র ১০ মিনিট কথা বলা স্মৃতিশক্তি ও পরীক্ষার স্কোর উন্নত করতে পারে! তাই মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান ও মিশুক হওয়ার চেষ্টা করুন।
8. মেডিকেল চেকআপ: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করতে এটি সাহায্য করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
9. অ্যালকোহল এবং ধূমপান পরিহার করুন: ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান স্বাস্থ্যহানিকর হতে পারে। এগুলো থেকে দূরে থাকুন। অনেকেই হতাশ হয়ে ধূমপান ও মাদকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। তবে জানেন কি, এগুলো হতাশা কাটায় না বরং শরীর ও মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত মদ্যপানে শরীরে থায়ামিনের ঘাটতি হতে পারে। থায়ামিন মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
10. সঠিক ওজন বজায় রাখা: ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং হৃদরোগ।
এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে আপনি সুস্থ ও সুখী জীবনযাপন করতে পারবেন।
-
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য কাকে বলে
শারীরিক স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় একজন মানুষের শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা, যেখানে সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করছে এবং কোনো গুরুতর রোগ বা শারীরিক সমস্যা নেই। শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজন সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং সঠিক জীবনযাত্রার অভ্যাস।
মানসিক স্বাস্থ্য হলো মনের সুস্থতা, যা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি, এবং আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ জীবনের চাপ সামলাতে, সম্পর্ক বজায় রাখতে, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হয়। এটি শুধু মানসিক রোগমুক্ত থাকা নয়, বরং আবেগ এবং মানসিক চাহিদা সামলানোর দক্ষতাকেও নির্দেশ করে। -
শারীরিক স্বাস্থ্য কি কি
শারীরিক স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা এবং কার্যক্ষমতা। এটি নিশ্চিত করে যে শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করছে এবং কোনো রোগ বা শারীরিক অসুবিধা নেই।
-
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বলতে কি বুঝায়
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বলতে বোঝায় স্বাস্থ্যকে সুস্থ, নিরাপদ এবং কার্যকর অবস্থায় রাখার জন্য নেওয়া পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টা। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতার উপর জোর দেওয়া হয়।