Sanjiv Khanna: আজ, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ভারতের ৫১ তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন জাস্টিস সঞ্জীব খান্না। গত ৭ নভেম্বর, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (DY Chandracud) পদত্যাগ করার পর সঞ্জীব খান্নাকে এই সম্মানজনক পদে মনোনীত করা হয়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ পাঠ করান। জাস্টিস সঞ্জীব খান্না আগামী ২০২৫ সালের ১৩ মে পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর জীবন এবং কেরিয়ার সম্পর্কে জানলে, বুঝতে পারা যায় যে তিনি ভারতীয় বিচারব্যবস্থার একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং প্রতিষ্ঠিত বিচারক। আসুন, বিস্তারিতভাবে জানি কেমন ছিল তাঁর যাত্রা এবং কীভাবে তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ পদে পৌঁছালেন।
Supreme Court Chief Justice Sanjiv Khanna
জাস্টিস সঞ্জীব খান্নার জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ মে, দিল্লির একটি সম্মানিত পরিবারে। তাঁর বাবা দেবরাজ খান্না ছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারক। পারিবারিক পরিবেশ তাঁকে আইন এবং ন্যায়বিচারের প্রতি এক বিশেষ মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করেছিল। সঞ্জীব খান্না সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন এবং তারপর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ল সেন্টার থেকে আইন নিয়ে উচ্চ শিক্ষার পাঠ সমাপ্ত করেন।
১৯৮৩ সালে আইনজীবী হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করার পর, জাস্টিস সঞ্জীব খান্না দিল্লি হাইকোর্টে এক উজ্জ্বল আইনজীবী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁর দক্ষতা এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি নিবেদন তাঁকে দ্রুত খ্যাতি এনে দেয়। ২০০৪ সালে তিনি দিল্লির ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরির (NCT) কৌশুলি হিসেবে কাজ শুরু করেন, যেখানে তিনি আরও বৃহৎ দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন।
এর পরের বছর ২০০৫ সালে, তাঁর আইনজীবী জীবনের সাফল্যের ফলস্বরূপ, তিনি দিল্লি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৬ সালে, তিনি স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান এবং তাঁর বিচারক জীবন আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে চলে। ২০১৯ সালে, তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান, যেখানে তিনি দেশের শীর্ষ আদালতের গুরুত্বপূর্ণ বিচারক হিসেবে কার্যক্রম শুরু করেন।
জাস্টিস সঞ্জীব খান্নার বিচারক জীবনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য কাজ হলো জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলোপ সংক্রান্ত মামলার শুনানি। এই মামলার শুনানিতে তিনি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যা দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়।
তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল নির্বাচনী বন্ড এবং আফগারি দুর্নীতি মামলার মতো নানান বিশাল এবং সমালোচিত মামলার বিচারে। এসব মামলায় তাঁর বিচারক পদ্ধতি এবং আইনের প্রতি অবিচল আস্থা বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের বিশ্বাসকে আরো মজবুত করেছে। জাস্টিস খান্নার বিচারে তাঁর গভীর আইনি জ্ঞান এবং ন্যায্যতার প্রতি অটল মনোভাব প্রমাণিত হয়েছে, যা তাকে বিচার ব্যবস্থার অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আজকের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির পদে আসীন হলেন। তাঁর দীর্ঘ এবং সফল কেরিয়ার বিচারব্যবস্থার জন্য এক বিশাল অবদান হিসেবে বিবেচিত হবে। বিচারপতি খান্না যে দক্ষতা, নিরপেক্ষতা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করেছেন, তা সুপ্রিম কোর্টের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর নেতৃত্বে আশা করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট আরও শক্তিশালী হবে এবং ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে।