লাইনচ্যুত লোকাল ট্রেন: অল্প বা বেশি দূরত্বের যাত্রা—সব ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের কাছে সবচেয়ে সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী মাধ্যম হল ট্রেন। তাই ভারতীয় রেলকে দেশের লাইফলাইন বলা হয়। তবে এটি যাত্রীদের প্রিয় মাধ্যম হলেও অভিযোগের শেষ নেই। কখনও দুর্ঘটনা, কখনও পরিষেবার গাফিলতি—দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন নানা সমস্যা সামনে আসছে। এসবের জেরে ভারতীয় রেলের কার্যক্রমেও মাঝেমধ্যেই ব্যাঘাত ঘটে। নতুন বছর পড়তেই তামিলনাড়ুতে ঘটে গেল বড় এক দুর্ঘটনা। সক্কাল সক্কাল ট্রেনের পাঁচটি বগি হঠাৎ করে লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে গেল রেললাইন থেকে। ঘটনায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এলাকা জুড়ে।
খবর অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ যাত্রিবাহী একটি ট্রেন ভিলুপুরম থেকে পুদুচেরির দিকে যাচ্ছিল। ভিলুপুরম রেল স্টেশন ছাড়ার কিছু পরেই ট্রেন চালক রেললাইনে একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। সেই সঙ্গে ভয়ানক ঝাঁকুনিতে ট্রেনটি দুলে ওঠে। যাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে চালক দ্রুত ট্রেনটি থামিয়ে রেল কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রেলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাত্রীদের ধীরে সুস্থে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেন। আনুমানিক ৫০০ জন যাত্রী থাকলেও, এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর মেলেনি।
রেল কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, সমস্ত যাত্রীকে আপাতত নিরাপদে ট্রেন থেকে নামানো হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হলো তা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। প্রাথমিক অনুমান, রেললাইনের উপর ভারী কোনো বস্তু পড়ে থাকার কারণেই ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে এবং সেই সময়ই সেই ভয়ংকর বিকট শব্দ শোনা যায়। এই ঘটনার ফলে আজ সকাল ৮.৩০টা পর্যন্ত ভিলুপুরম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়।
ভিলুপুরম স্টেশন থেকে পুদুচেরি পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ৩৮ কিলোমিটার। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আজ ট্রেনটি যাত্রা শুরুর পর একদম স্বাভাবিকভাবেই এগোচ্ছিল। তবে কিছুটা যাওয়ার পরই হঠাৎ বিকট শব্দ শোনা যায়। শব্দ শুনে সবাই ছুটে গিয়ে দেখেন ট্রেনটি থেমে আছে, আর পাঁচটি কামরা লাইন থেকে বেরিয়ে এসেছে। চালক সময়মতো ট্রেন থামানোর জন্য না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত। এমনকি যাত্রীদের প্রাণহানির মতো বড় দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারত বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।