মুখ ভর্তি ব্রণ দূর করার সহজ উপায়?: বর্তমানে স্কিন কেয়ারের সংজ্ঞাই যেন বদলে গিয়েছে। শুধু ফেসওয়াশ বা ময়েশ্চারাইজার নয়—আজকের দিনে ত্বকের যত্ন মানেই হল একগুচ্ছ সিরাম, ক্রিম আর অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের সমাহার। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা আর প্রয়োজন অনুযায়ী এখন রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন উপাদান। যেমন ধরুন, ত্বকে আর্দ্রতার অভাব হলে সাহায্যে আসে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, জেল্লা বাড়াতে কাজে দেয় নিয়াসিনামাইড, আর অ্যাকনে-র সমস্যা থাকলে বেশিরভাগেই পছন্দ স্যালিসাইলিক অ্যাসিড।
মুখ ভর্তি ব্রণ দূর করার সহজ উপায়
এইসব উপাদান এখন এতটাই জনপ্রিয় যে, সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেট ঘেঁটে অনেকেই এগুলোর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত। তবে এর মাঝেও একটা নাম কিন্তু ধীরে ধীরে দারুণভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে—গ্লাইকোলিক অ্যাসিড। শক্তিশালী এক্সফোলিয়েটিং ক্ষমতার জন্য এই উপাদানটি ত্বকের গভীরে কাজ করে। মৃত কোষ সরিয়ে দিয়ে ত্বককে করে তোলে আরও উজ্জ্বল, মসৃণ আর তরতাজা। অনেকেই যাঁরা ডাল বা অনুজ্জ্বল ত্বকে ভুগছেন, তাঁদের কাছে এটি এখন একপ্রকার ‘স্কিন কেয়ার হিরো’। তাই আজকের লেখায় জেনে নেব গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের উপকারিতা, ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি এবং ত্বকের জন্য কেন এটি এত কার্যকরী।
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড আসলে কী?
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড হল এক ধরনের আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড (AHA)। আখ, লেবু বা মেলনের মতো ফলে এই প্রাকৃতিক অ্যাসিডের সন্ধান মেলে। এটি জলে দ্রবণীয়। মূলত এর দুর্দান্ত এক্সফোলিয়েটিং ধর্মের জন্য স্কিন কেয়ারে এর বহুল ব্যবহার। এই বার এর উপকারিতা জেনে নেওয়া যাক।
মৃত কোষ দূর হয়
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড হল এমন এক স্কিন কেয়ার উপাদান, যা ত্বকের মৃত কোষের স্তর আলতোভাবে তুলে দেয়। ফলে ত্বক এক্সফোলিয়েট হয়, অর্থাৎ উপরের দিকের কালচে ও রুক্ষ ভাবটা সরে গিয়ে ভেতরের উজ্জ্বলতা ফুটে ওঠে। নিয়মিত ব্যবহার করলে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ত্বকের কোষগুলোর পুনর্গঠনে সাহায্য করে, ফলে ত্বক হয় আরও প্রাণবন্ত, ঝকঝকে আর মসৃণ। যাদের ত্বক অনুজ্জ্বল বা নিষ্প্রাণ লাগে, তাদের জন্য এটি হতে পারে স্কিন কেয়ারে এক অসাধারণ সংযোজন।
দূর হয় ব্রণ-র দাগ
ব্রণ সেরে গেলেও তার জেদি দাগ থেকে যায়। তবে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্রণ-র দাগ, কালচে ছোপ মিলিয়ে দেয় ধীরে ধীরে। এছাড়া অ্যাকনে সারাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই অ্যাসিড। ত্বকে জমে থাকা তেল ও ময়লা টেনে বের করে পোরসকে পরিষ্কার রাখে এই উপাদান। এছাড়া এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ধর্ম। যার ফলে ব্রণ হয় না আর।
ত্বকে দেখায় সজীব
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন ধীরে ধীরে কমে যায়। যার ফলে ত্বক তার স্বাভাবিক টানটানভাব হারাতে শুরু করে। মুখে দেখা দিতে শুরু করে ফাইন লাইনস ও রিঙ্কেলস। কিন্তু ভালো খবর হলো, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড এই কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক আবার ফিরে পায় তার স্থিতিস্থাপকতা। ত্বকে সহজে ভাঁজ পড়ে না, আর দীর্ঘদিন ধরে অটুট থাকে ত্বকের তারুণ্য ও উজ্জ্বলতা।
গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের ব্যবহার
বাজারে এখন গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ফেসওয়াশ, টোনার, সিরাম, পিলিং মাস্ক আর ক্রিমের আকারে সহজেই পাওয়া যায়। প্রথম দিকে রাতে সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন গ্লাইকোলিক অ্যাসিডের সিরাম, টোনার বা ক্রিম ব্যবহার করুন। ত্বক যদি ভালোভাবে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন ধীরে ধীরে ব্যবহার বাড়িয়ে সপ্তাহে তিন দিন করে করতে পারেন। একটু ধৈর্য ধরলেই আপনি নিজের চোখে পরিবর্তন দেখতে পাবেন—ত্বক হয়ে উঠবে অনেক উজ্জ্বল, দাগ ও ছোপ কমে যাবে। এটা একদম স্বাভাবিক ও সুন্দর ত্বকের জন্য দারুণ সহায়ক!
সতর্কতা অবলম্বন জরুরি
গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ত্বককে সূর্যের প্রতি একটু বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। তাই সকালে অবশ্যই ৩০ বা তার বেশি SPF যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা খুব জরুরি। সাধারণত গ্লাইকোলিক অ্যাসিড রাতের সময়ই ব্যবহার করাই ভালো, সকালে সূর্যের আলোতে এটা লাগানো ঠিক হয় না। প্রথমবার ব্যবহার করলে ৫% বা তার কম ঘনত্বের প্রোডাক্ট দিয়ে শুরু করুন, যাতে ত্বক সহজে মানিয়ে নিতে পারে। আর যদি আপনার ত্বকে কোনও চর্মরোগ থাকে বা সংবেদনশীল হয়ে থাকে, তাহলে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তারপর গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার শুরু করাই সবচেয়ে ভালো। এতে আপনার ত্বক নিরাপদ থাকবে এবং ভালো ফল পাবেন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য। এটি কোনও ওষুধ বা চিকিৎসার অঙ্গ নয়। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে হলে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join JKNEWS24 Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join NEWS24 |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |