24 C
Kolkata
Wednesday, February 12, 2025

শাস্তির খাঁড়া সঞ্জয়ের সঙ্গে সন্দীপের উপরেও! বিচারপতির ১৭২ পাতার নির্দেশে পুলিশের নতুন নাম

শাস্তির খাঁড়া সঞ্জয়ের সঙ্গে সন্দীপের উপরেও, গত শনিবার থেকেই তৈরি হয়েছিল উত্তেজনাপূর্ণ এক পরিস্থিতি। আরজি কর কাণ্ডে অন্যতম দোষী সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের শাস্তি নিয়ে চলছিল নানা আলোচনা ও উদ্বেগ। শিয়ালদা কোর্টে শনিবার সঞ্জয়ের শাস্তি এবং সাজা ঘোষণা করা হলেও ঠিক কোন শাস্তি দেওয়া হবে, সেটা তখন জানানো হয়নি। বলা হয়েছিল, সোমবারের মধ্যে সেই ঘোষণা হবে। অবশেষে গতকাল, অর্থাৎ সোমবার, সেই উত্তেজনার অবসান ঘটল। শিয়ালদা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস দোষী সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারকে নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপটেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন

আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়কে শুধু শাস্তি ঘোষণা করা হয়নি, বরং ১৭২ পাতার নির্দেশনামায় বিচারক অনির্বাণ দাস তার রায়ের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন এবং তদন্তের নিরিখে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণও করেছেন। এই কাণ্ডে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও বিচারক কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তার পর্যবেক্ষণে, খুনের ঘটনা সামনে আসার পর FIR-এ পুলিশি তদন্তে কিছু খামতি ছিল। বিশেষভাবে, টালা থানার SI সুব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং লালবাজারের তৎকালীন উইমেন্স গ্রিভ্যান্স সেলের অতিরিক্ত ওসি রূপালী মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আরজি কর হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষেরও ভূমিকা নিয়ে তদন্তের মধ্যে নানা দিক উঠে এসেছে।

ফের উঠে আসল সঞ্জয়ের ভূমিকা

বিচারকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৯ আগস্ট রাতে সিনিয়র চিকিৎসক সুমিত রায় তপাদার যখন ওই মহিলা চিকিৎসকের দেহ দেখে বুঝতে পারলেন যে তাকে খুন করা হয়েছে, তখন তিনি দ্রুত হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে বিষয়টি জানান। এরপর তিনি হাসপাতাল সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ এবং অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ফোন করেন, কিন্তু তারা ফোন তোলেননি। পরে সন্দীপ ঘোষ ফোন করে দেহ মর্গে নিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। এই পরিস্থিতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক, কেন সন্দীপ ঘোষ ওই দেহ মর্গে নিয়ে যেতে বলেছিলেন, এবং তা নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

এদিকে, সঞ্জয়ের ফোন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এসেছে বিচারক অনির্বাণ দাসের নজরে। তাঁর মতে, গত ৯ আগস্ট রাতে অভিযুক্তের ফোন টালা থানায় রাখা হয়েছিল, এবং সঞ্জয়ের ফোনটি রাখা হয়েছিল লালবাজারের তৎকালীন উইমেন্স গ্রিভ্যান্স সেলের অতিরিক্ত ওসি রূপালী মুখোপাধ্যায়। যদিও তিনি বলেছেন, ওই সময় ফোনে কোনো কারসাজি হওয়ার প্রমাণ মেলেনি, তবুও তাঁর বক্তব্যে কিছু স্পষ্টতার অভাব দেখা গেছে। তাহলে প্রশ্ন উঠছে—কেন এমন একটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল?

আদালতের রায়ে অসন্তুষ্ট মমতা

অন্যদিকে, গতকাল বিচারকের রায়দানের পর মুর্শিদাবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে এসে বলেন, “আমি বিচারের রায় নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমাদের কাছ থেকে কেসটা ইচ্ছে করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে থাকলে অনেক আগেই ফাঁসির অর্ডার করিয়ে নিতাম।” তিনি আরও বলেন, “ফাঁসি হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম। জানি না কী ভাবে লড়াই করেছেন, কী যুক্তি, সুতরাং ডিটেলস জানি না।” তবে তাঁর এই মন্তব্যের পর কিছুটা আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে যে, সরকার শিয়ালদা আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করতে পারে।

JK Official
JK Official
বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেইসঙ্গে গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে JKNews24 এর সঙ্গে কাজ করছি। বিশেষ করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনা, এবং সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে চর্চা ও বিশ্লেষণ করতে ভালোবাসি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

24,000FansLike
3,000FollowersFollow
2,300SubscribersSubscribe

POPULAR POST

Top Collection