গ্রামীণ সড়ক যোজনা: কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত এখন আর সাধারণ মানুষের কাছে নতুন কিছু নয়। প্রথম থেকেই উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ অর্থ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। রাজ্য সরকারের দাবি, আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এখনও এসে পৌঁছায়নি। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে চিঠি দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলেও কেন্দ্র কোনও সদুত্তর দেয়নি। বরং উল্টো, আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে বরাদ্দ অর্থ প্রায় দুই বছর ধরে আটকে রেখেছে। এছাড়া, রাজ্যের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার টাকাও কেন্দ্র পাঠাচ্ছে না।
Table of Contents
গ্রামীণ সড়ক যোজনার বরাদ্দ টাকা দেবে কেন্দ্র!
কেন্দ্রের উপর আর ভরসা না করে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের তহবিল থেকে নিজস্বভাবে আবাস যোজনার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একইসঙ্গে, ১০০ দিনের কাজের জন্যও টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে, এই মুহূর্তে রাজ্য প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে যে, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার আটকে থাকা বরাদ্দ এবার কেন্দ্র পাঠাতে চলেছে। কয়েকদিন আগে, রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্রের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনার পর, আশা করা হচ্ছে যে দ্রুত টাকা পৌঁছাবে। তবে, এখনও সরকারি স্তরে এ বিষয়ে কোনও স্পষ্ট ঘোষণা আসেনি, এবং রাজ্য সরকার নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি।
বর্তমানে পথশ্রী প্রকল্পের জন্য টাকাও রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ পরিচালনা করছে, যদিও কেন্দ্র থেকে এখন আর তেমন কোনও বরাদ্দ আসেনি। শেষবার গ্রামীণ সড়ক যোজনার টাকা রাজ্যকে ২০২২ সালে পাওয়া গিয়েছিল, যখন কেন্দ্র প্রায় ৩৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। তবে, সড়ক যোজনার কাজের ক্ষেত্রে, কেন্দ্র ৬০ শতাংশ টাকা দিলেও বাকি ৪০ শতাংশ টাকা রাজ্যকেই দিতে হয়। এর পর থেকে, গ্রামীণ সড়ক যোজনা খাতে আর কোনো বরাদ্দ টাকাই দেয়নি কেন্দ্র। তবে, যদি পূর্বাভাস অনুযায়ী কেন্দ্র বরাদ্দ টাকা রাজ্যকে দেয়, তাহলে রাজ্য সরকার ওই খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকা পেতে পারে।
কী বলছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী?
পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সম্প্রতি বলেছেন, “প্রায় ছ’হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করার পরেও গত দুই বছর ধরে বরাদ্দ টাকা আটকে রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “দিন তিনেক আগে কেন্দ্রের সঙ্গে আধিকারিক স্তরে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে, এখনই বলা সম্ভব নয়, টাকা ছাড়া হচ্ছে কি না। সোমবার নথি দেখলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। মন্ত্রীর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, যদিও রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার আশা করছে, কিন্তু বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়।