প্রতিমাসে ₹২০০০০ পেনশন: পোস্ট অফিসের বিভিন্ন বিনিয়োগ স্কিম (Post Office SCSS) বহু মানুষের কাছে এক বিশ্বাসযোগ্য এবং সুরক্ষিত অপশন হয়ে উঠেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই পোস্ট অফিস সাধারণ মানুষের জন্য একাধিক সেভিংস স্কিম (Post Office Savings Scheme) চালু করেছে। এই স্কিমগুলির মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ বিনিয়োগ করে নিজেদের ও পরিবারের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করেছেন। সহজ শর্ত এবং সুরক্ষিত রিটার্নের কারণে বহু মানুষ চোখ বন্ধ করে পোস্ট অফিসের স্কিমগুলিতে বিনিয়োগ করতে পছন্দ করেন।
Post Office SCSS Interest Rate 2025
প্রত্যেকটি ব্যক্তি ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা জরুরি মনে করেন, কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে কাজ করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। বিশেষ করে যারা বেসরকারি চাকরি বা ব্যবসা করেন। যদি কম বয়স থেকেই সঞ্চয় শুরু করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে আর কোনও আর্থিক চিন্তা থাকে না। যদিও এখন SIP, Mutual Fund এর মতো অনেক স্কিম চলে এসেছে, তবুও এগুলোতে কিছু ঝুঁকি থাকে। তাই অনেকেই পোস্ট অফিস সেভিংস স্কিম, বিশেষ করে Senior Citizen Savings Scheme-কে তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেন।
পোস্ট অফিস সিনিয়ার সিটিজেন সেভিংস স্কিম
বর্তমানে ব্যাংক এবং পোস্ট অফিস বিভিন্ন ধরনের স্কিম চালু করেছে, যেগুলোর মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে ভালো পরিমাণ টাকা রিটার্ন পাওয়ার সুযোগ থাকে। তবে, যেকোনো প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হয় যে সেখানে আর্থিক নিরাপত্তা আছে এবং সুদের হারও সর্বোচ্চ। সম্প্রতি পোস্ট অফিস (India Post Office) বয়স্কদের জন্য একটি দারুণ স্কিম এনেছে, যেটাতে বিনিয়োগ করলে আপনি প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা পেনশনের সুবিধা পেতে পারেন।
বয়স্ক নাগরিকদের জন্য এই বিশেষ স্কিমের নাম হলো সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম। এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে আপনি ৮.২ শতাংশ হারে সুদ পাবেন। স্কিমে বিনিয়োগ করতে হলে বিনিয়োগকারীর বয়স ৬০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে হতে হবে। অবসর গ্রহণ করা বয়স্ক ব্যক্তিরাও এই স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এছাড়াও, যেসব ব্যক্তিরা সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছেন, তারা ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সী হলেও পোস্ট অফিস সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবেন।
Senior Citizen Savings Scheme Interest Calculator
সিনিয়র সিটিজেন স্কিমে সর্বনিম্ন বিনিয়োগের পরিমাণ ১,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বিনিয়োগের পরিমাণ ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রাখা হয়েছে। স্কিমের মেয়াদ ৫ বছর। যদি আপনি প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা পেনশন পেতে চান, তাহলে সিনিয়র সিটিজেন স্কিম আপনার জন্য একটি চমৎকার বিকল্প। এটি একটি দুর্দান্ত সঞ্চয় স্কিম যা মেয়াদ শেষে নিশ্চিত লাভসহ রিটার্ন প্রদান করে।
একজন ব্যক্তি তার কর্মজীবনে যে পরিমাণ পরিশ্রম করেন, সেই পরিশ্রম বৃদ্ধবয়সে আর সম্ভব হয় না। তাই প্রত্যেকটি ব্যক্তির উচিত, বয়স থাকতে এমন একটি নিরাপদ বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণ করা, যেখানে সঞ্চয় থেকে বৃদ্ধবয়সে পেনশন মত একটি মাসিক আয় পাওয়া যাবে, যাতে বৃদ্ধ বয়সটি নির্ভাবনায় কাটানো যায়। যদি আপনারও এমন চিন্তা থাকে, তাহলে পোস্ট অফিসের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করা হবে একদম উপযোগী।
যদি আপনি একাউন্ট খোলার পর মনে করেন যে আর বিনিয়োগ করতে চান না, তবে আপনি একাউন্ট খোলার তারিখ থেকে পাঁচ বছর পর সেই একাউন্ট বন্ধ করতে পারেন। এছাড়া, যদি কোন কারণে একাউন্টধারীর মৃত্যু ঘটে, তাহলে তার মৃত্যু তারিখ থেকে পোস্ট অফিস সেভিংস একাউন্টের প্রাপ্ত সুদ নমিনিকে দেওয়া হবে। তাই একাউন্ট খোলার সময় নমিনির নাম দেওয়া একদমই ভুলবেন না।
How to Get 20000 INR on this Post Office Savings Scheme
যদি আপনি প্রতি মাসে পেনশনের মতো একটি মোটা টাকা পেতে চান, তাহলে পোস্ট অফিসের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করা হবে আপনার জন্য একটি বুদ্ধিমানের সিদ্ধান্ত। এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে আপনি শুধু লাভজনক রিটার্ন পাবেন না, পাশাপাশি সেকশন 80C এর অধীনে ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধাও (Income Tax Rebate) পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন ব্যক্তি ৩০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে তিনি শুধুমাত্র মাসিক পেনশনই পাবেন না, বরং ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধাও ভোগ করবেন।
তাহলে, বার্ষিক ৮.২% সুদের হারে, তিনি প্রতি বছর ২.৪৬ লক্ষ টাকা সুদ পাবেন। এই সুদের হারে, প্রতি মাসে ২০,৫০০ টাকা রিটার্ন পাবেন। চাকরি থেকে বিরতি নেওয়ার পরও, পেনশনের মতো প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা পাওয়ার মাধ্যমে, আপনার বৃদ্ধবয়সে সব রকম চাহিদা সহজেই মেটানো সম্ভব হবে। বলতে গেলে, পোস্ট অফিসের সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করলে বৃদ্ধবয়সে আর্থিক নিরাপত্তা পাওয়া যায় এবং বয়স্ক কালীন আর্থিক চিন্তা অনেকটাই কমে যায়। এটি একটি অত্যন্ত নিরাপদ ও লাভজনক উপায়।
এত উচ্চ হারে সুদ শুধু মাত্র পোস্ট অফিসে পাওয়া যায়, তাই আর দেরি না করে আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিসে গিয়ে সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জেনে বিনিয়োগ করুন। তবে, মনে রাখবেন যে, যেকোনো স্কিমের সুদের হার সময়ে সময়ে বদলাতে পারে, তাই বিনিয়োগের আগে স্কিমের সকল শর্ত এবং সুবিধা ভালো করে বুঝে নিয়ে তবেই সিদ্ধান্ত নেবেন। এটি আপনার ভবিষ্যতের জন্য একটি নিরাপদ এবং লাভজনক পদক্ষেপ হতে পারে, তাই সঠিক তথ্য নিয়ে বিনিয়োগ করুন।