ভারত চীনকে পাশে চায় বাংলাদেশ? মহম্মদ ইউনূস এবার এক নতুন পথ ধরেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এবার ভারতের সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। গত মাসে তিনি আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। যেখানে ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুজনেই উপস্থিত ছিলেন।
যখন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত প্রশ্ন করা হয়। তখন তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান এবং বরং বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কোটে ঠেলে দেন। এই পরিস্থিতি থেকেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, আমেরিকার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস।
ট্রাম্পের আমলে কোনওরকম সাহায্য পাবে না বাংলাদেশ?
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সম্প্রতি ট্রাম্প সরকারের সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছিলেন। তবে ট্রাম্প সরকারের কড়া হাতে বাংলাদেশের প্রস্তাব উড়িয়ে দেওয়ার পর, ইউনূস এখন ভারতের সাথে সম্পর্ক তৈরির নতুন পথ খুঁজছেন। গত মাসে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ক্যামেরার সামনে আসেন, তখন সুকৌশলে বাংলাদেশ সম্পর্কিত প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতি থেকে মনে হচ্ছে, ইউনূস ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার দিকে আরও মনোযোগী হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সম্পর্কে যাবতীয় মন্তব্যের দায়ভার চাপানো হয়েছিল নরেন্দ্র মোদির ওপরই। রিপাবলিকান নেতা এবং আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পরই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। ট্রাম্প ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন করে গড়তে চান। ভারতের সাথে সম্পর্ক ভাল না থাকলে বাংলাদেশ আমেরিকার কাছ থেকে কোনো রকম সাহায্য পাবে না। এই পরিস্থিতি থেকে ধারণা করা হচ্ছে। ইউনূস এখন সেই আশঙ্কা বুঝে ভারতের সাথে সম্পর্ক মজবুত করার পথে হাঁটতে চলেছেন।
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট দাবি করছে, আমেরিকার প্রত্যাখ্যানের পর ইউনূস বুঝে গিয়েছিলেন যে জো বাইডেনের আমলে আমেরিকার তরফে বিভিন্ন সহযোগিতা পেলেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বাংলাদেশ আর কোনও রকম সাহায্য পাবে না। ফলত, আমেরিকার সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করতে হলে আগেভাগে ভারতের সাথে সম্পর্ক ঠিক করতে হবে বাংলাদেশকে। এহেন আবহে কানে আসছে নতুন খবর, জানা যাচ্ছে, আমেরিকার কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এবার চিনের শরণাপন্ন হতে পারে বাংলাদেশ।
চিন সফরে যাচ্ছেন ইউনূস?
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে, আগামী ২৬ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত চিন সফরে থাকবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। জানা যাচ্ছে, তিনি মূলত বিওএও ফোরামে যোগ দিতে চিনের হুনান প্রদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। তবে সূত্র বলছে, চিনে পা রেখেই তিনি শি জিনপিংয়ের সাথে দেখা করবেন। এরপর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আমেরিকার উদাসীনতা নিয়ে কথা বলার সম্ভাবনা রয়েছে ইউনূসের। মনে করা হচ্ছে ভারতের সাথে সম্পর্কের অবনতি নিয়েও সেখানে আলোচনা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাতের জন্য মুখিয়ে রয়েছেন ইউনূস?
প্রকাশ্যে আসা বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনের রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতের পর ইউনূস চিন সফর শেষ করে এপ্রিলে দেশে ফিরবেন। আর এরপরই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করতে পারেন। সূত্র বলছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মোদির সাথে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউনূস। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি মূলত ভারতের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন।