হাওড়া (Howrah) মানেই শুধু ধুঁকতে থাকা পুরনো কারখানা আর ঘিঞ্জি শহর নয়। এর ইতিহাস জানলে চমকে যাবেন! হাওড়ার গুরুত্ব বোঝার জন্য এর অতীতের পাতাগুলো উল্টে দেখা জরুরি। আসলে, এই শহর শুধু ব্রিজ, রেলওয়ে স্টেশন বা ব্যস্ত বাজারের জন্যই পরিচিত নয়—এর গভীরে লুকিয়ে আছে এক দুর্দান্ত ঐতিহ্য ও সংগ্রামের গল্প। আজ আমরা খুঁজে দেখব, ঠিক কী কারণে হাওড়া এত বিখ্যাত, আর কেনই বা ৪৬ বছর চেষ্টা করেও ইংরেজরা একসময় দখল করতে পারেনি
কলকাতা ছিল ব্রিটিশ ভারতের প্রাণকেন্দ্র, আর তার পাশেই থাকা হাওড়াও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ব্রিটিশরা কলকাতাকে যেমন সাজিয়েছিল, হাওড়াতেও তার ছাপ স্পষ্ট। হাওড়া বলতেই সবার আগে মাথায় আসে হাওড়া ব্রিজ, হাওড়া রেল স্টেশন, বড়জোর বেলুড় মঠ। কিন্তু এর বাইরেও হাওড়ার অনেক না জানা ইতিহাস আছে, যা অনেকেরই অজানা। এই শহরের প্রতিটা অলিগলিতে লুকিয়ে আছে গল্প, সংগ্রাম আর একসময়ের অপরাজেয় প্রতিরোধের চিহ্ন!
একসময় হাওড়া ছিল শিল্পের প্রাণকেন্দ্র। চারপাশে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য কল-কারখানা, আর তারও আগে, এই শহর ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। শুনে অবাক লাগছে? কিন্তু এটাই সত্যি! হাওড়া জেলার বেতর এলাকায় একসময় ছিল অন্যতম প্রধান বন্দর, যেখানে নৌপথে চলত ব্যবসা-বাণিজ্যের রমরমা। তাই শুধু ঘিঞ্জি শহর বা পুরনো কারখানার গল্প নয়, হাওড়ার বুকে লুকিয়ে আছে একসময়ের ব্যস্ত বাণিজ্যকেন্দ্রের ইতিহাস।
অনেকেই মনে করেন, “হাওড়া” নামটি এসেছে “হাওর” শব্দ থেকে, যার অর্থ জলাভূমি। একসময় হাওড়ায় প্রচুর জলাভূমি ছিল, তাই সেখান থেকেই এই নাম এসেছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এ নিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। ইতিহাসে হাওড়ার সঙ্গে শালকিয়া বা পূর্বতন শালিকার নামও জড়িয়ে আছে। কলকাতার পাশাপাশি ইংরেজদের কাছেও হাওড়া ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানেই ছিল বেতর বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখানে বড় বড় জাহাজ নোঙর ফেলত। তবে শুধু ইংরেজদের সময়ই নয়, তারও আগে হাওড়া ছিল ভূরিশ্রেষ্ঠ রাজ্যের অংশ। অর্থাৎ, এই শহর শুধুই একটি শিল্প এলাকা নয়, বরং একসময় এটি ছিল বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র।
হাওড়ার এই অজানা ইতিহাস জানেন কি?
কলকাতা সহ গোটা বাংলা, বলা ভালো পুরো ভারত যখন ব্রিটিশদের দখলে চলে যাচ্ছিল, তখনও হাওড়ায় তারা সহজে দাঁত বসাতে পারেনি। টানা ৪৭ বছরের প্রচেষ্টার পর, পলাশির যুদ্ধের (১৭৫৭) পর অবশেষে হাওড়া ইংরেজদের শাসনের অধীনে আসে। এরপরই শুরু হয় আধুনিকায়নের কাজ, বিশেষ করে নদীর কাছাকাছি এলাকাগুলোতে। তৈরি হয় সেতু, রেলস্টেশন, শিল্প কারখানা—যার অনেক কিছুই আজও টিকে আছে।
আমরা আজ যে হাওড়া ব্রিজ দেখি, একসময় সেখানে ছিল একটি ভাসমান সেতু, যাকে বলা হত পন্টুন ব্রিজ। পরবর্তীতে সেটিকেই রূপান্তরিত করা হয় বর্তমান হাওড়া ব্রিজে, যা প্রকৌশলগত দিক থেকে এক বিস্ময়! খেয়াল করলে দেখবেন, গঙ্গার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা এই বিশাল সেতুটির নিচে কোনো পিলার নেই। এটি একটি ক্যান্টিলিভার ব্রিজ। যা মানব সভ্যতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইঞ্জিনিয়ারিং কীর্তির মধ্যে একটি। তবে হাওড়ার ইতিহাস শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, এর প্রতিটি ইট-পাথরে জড়িয়ে আছে বহু অজানা গল্প। জানতে হলে আরো পড়তে হবে, আরও ঘাঁটতে হবে এই শহরের অতীত!
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join JKNEWS24 Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join NEWS24 |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |