বাংলার পাশেই স্বর্গ: একটু মন দিয়ে ভাবুন, যদি বাংলার একেবারে কাছেই থাকে এমন একটা জায়গা, যেখানে গেলে মনে হবে যেন বালির সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন! ভারতের বুকেই আছে এমন এক স্বর্গ, যার সৌন্দর্য বিদেশের জনপ্রিয় ডেস্টিনেশনকেও টেক্কা দিতে পারে। পাহাড়, সমুদ্র, সবুজ অরণ্য আর মেঘের খেলা—সবকিছু মিলিয়ে এ এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। ছবিগুলো দেখলেই মনে হবে, সত্যিই কি এটা ভারত? কিন্তু হ্যাঁ, এটা আমাদের দেশেই আছে!
আপনি যদি ইন্দোনেশিয়ার বালির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন, তাহলে একবার ঘুরে আসতে পারেন ভারতের এই স্বপ্নের জায়গায়! সোশ্যাল মিডিয়ায় বালির অসাধারণ সৈকত, সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে অনেকের মন কেড়ে নেয়, কিন্তু জানেন কি? আমাদের দেশেই আছে এমন এক জায়গা, যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। বরং অনেকের মতে, এটি আরও মনোমুগ্ধকর! তাহলে, কোথায় রয়েছে ভারতের এই এক টুকরো ‘বালি’? চলুন, খুঁজে দেখি সেই স্বর্গসম জায়গাটি!
ওয়ারী চোরা (Wari Chora) – মেঘালয়ের এক সুক্ষ্ম রত্ন, যা শিলং থেকে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার দূরে। শিলং তো সহজেই পৌঁছানো যায়, কিন্তু এরপরের যাত্রা এক কথায় অ্যাডভেঞ্চার। দক্ষিণ গারো পাহাড়ের এক কোণে অবস্থিত এই স্থানটি, যেখানে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে বেশ কিছু এবড়োখেবড়ো পথ পাড়ি দিতে হবে। যারা এক্সট্রা বিলাসিতায় অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য হয়তো এই যাত্রা একটু চ্যালেঞ্জিং হবে, কারণ এই রাস্তায় কিছুটা ট্রেক করতে হবে। তবে একবার যদি আপনি এখানে পৌঁছান, তাহলে বুঝবেন যে এই কষ্টের সবটা উপভোগ্য। প্রকৃতির মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার অনুভূতি এবং অপরূপ দৃশ্য, এই যাত্রাটিকে আপনার জীবনের অমূল্য স্মৃতি করে রাখবে।
ওয়ারী চোরা যাওয়ার পথে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে। সরু পথের দু’ধারে ঘন জঙ্গল, যেখানে প্রকৃতি নিজের মতো করে বেড়ে উঠেছে। পুরো অঞ্চলটা যেন এক জাদুকরী পরিবেশ, যেখানে স্থানীয় গাইডের সাহায্য ছাড়া পথচলা সম্ভব নয়। গাছের কোলাকুলিতে হারিয়ে যাওয়ার মতো দৃশ্য, পাখিদের মিষ্টি গান—প্রকৃতির সুর, সব কিছু মিলে এক অনন্য অনুভূতি সৃষ্টি করে।
ধাপে ধাপে ঝর্ণা নেমে গেছে, আর তার নিচে নীলচে সবুজ রঙের নদী বয়ে চলেছে খাদের মাঝে। জলভ্রমণেরও সুযোগ রয়েছে, আর চারপাশে ঘন গাছপালা ও লতাপাতা ঢেকে দিয়েছে রাস্তাগুলোর মুখ। মাঝে মাঝে খাদের ফাঁক দিয়ে রোদ যেন সিনেমার সিকোয়েন্সের মতো চুঁয়ে পড়ে। এই জায়গাটি একেবারে পৃথিবীর অন্য এক প্রান্তের মতো, যেখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য আর শান্তি আপনাকে অভিভূত করে ফেলবে।
জায়গাটা যেহেতু লোকবসতি থেকে অনেকটা দূরে, তাই পর্যটক সমাগম হাতেগোনা। নির্বিঘ্নে প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে পারেন, মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন। একবার ঘুরে আসুন। পরে গল্প বলার মতো রসদ পেয়ে যাবেন।