শেখ হাসিনা সিংহাসন ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। নতুন অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার গঠনের পরেও সমস্যা এবং অস্বস্তিকর পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ওপার বাংলায় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ক্রমেই বাড়ছে, যা নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অমানবিক নির্যাতনের ফলে অনেকেই সীমান্ত পার হয়ে এপার বাংলায় আশ্রয় নিচ্ছে। আর এই পরিস্থিতি ব্যবহার করে বেশ কিছু জঙ্গি সংগঠনও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যদিও BSF এর তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চোরা চালান এবং জমির ফসল, শাকসবজি চুরির ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং কৃষকদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা সীমান্তের এপারে এসে তাণ্ডব চালাচ্ছে, আর তার ফলে সাধারণ মানুষও ভুগছে। এদিকে, বিজেপি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার জন্য এবং প্রয়োজনীয় আউটপোস্ট তৈরির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমি দিচ্ছেন না। তবে, রাজ্য সরকার এবার সেই অভিযোগকে পাত্তা না দিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে জমি প্রদান করেছে, যা সীমান্ত নিরাপত্তার উন্নতির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF)-কে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নেয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। গত সপ্তাহে নদিয়ার করিমপুরে ০.৯ একর জমি BSF-কে দেওয়া হয়েছে। তবে এবার জমির পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়েছে। জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিরোধীদের মুখে জবাব দিতে এবং সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করতে জলপাইগুড়ি এবং মালদা জেলায় আরও দুটি নির্দিষ্ট জায়গায় BSF-কে জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি গতকাল, মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেয়া হয়েছে। এর ফলে সীমান্ত সুরক্ষা আরও কার্যকরী হবে এবং রাজ্য সরকার নতুন পদক্ষেপে আগের বিতর্কের উত্তরের চেষ্টা করছে।
ইদানীং ভারতে সীমান্তের বেড়া টপকিয়ে অনুপ্রবেশের ঘটনা বাড়ছে, বিশেষ করে জলপাইগুড়ি এবং মালদা জেলা থেকে প্রতিনিয়ত এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। শুধু এটুকু নয়, জঙ্গিরাও অনুপ্রবেশের মাধ্যমে দেশের ভেতরে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকার এবার BSF-কে এই দুই জেলায় জমি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে সীমান্ত পুরোপুরি সিল করা যায়। জানা গেছে, জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে ০.০৫ একর এবং মালদার নারায়নপুরে ১৯.৭৩ একর জমি BSF-কে দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপ সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারে সাহায্য করবে এবং অনুপ্রবেশের ঘটনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রাজ্য সরকার শুধু BSF-কে জমি প্রদান করছে না, বরং ওই দুই জেলায় পর্যটকদের জন্য হোম স্টে তৈরি করার জন্য জমির ব্যবস্থা করছে। এই হোম স্টেগুলি হবে তিনটি জায়গায়, যার মধ্যে দুটি আলিপুরদুয়ারে এবং একটি জলপাইগুড়িতে হবে। জমিটি নেওয়া হচ্ছে চারটি চা-বাগান থেকে, যেখানে সুন্দর হোম স্টে তৈরি হবে, যাতে পর্যটকরা প্রকৃতির মাঝে শান্তিপূর্ণভাবে সময় কাটাতে পারেন। রাজ্য সরকার শীঘ্রই এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত পর্যালোচনা করবে এবং পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।