কুশল দাসগুপ্ত,শিলিগুড়ি: রেল যাত্রা আতঙ্ক তৈরি করেছে বালুরঘাটে। ভোর সাড়ে পাঁচটা। রাস্তা কুয়াশার চাদরে ঢেকেছে। শহরের অনেকেই ততক্ষণ লেপ, কম্বলের তলায়। শীতকাতুরেরা তখন অ্যালার্ম বন্ধ করতে ব্যস্ত। কিন্তু কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরের শান্তনু, সামিউলদের চিন্তা অন্য জায়গায়।
কুয়াশার কারণে একেই কম গাড়ি, তারপর রাস্তায় কিছু দেখা যাচ্ছে না। হরিশ্চন্দ্রপুরে যাওয়া গাড়ি বলতে ভরসা সেই মালদা টাউন-কাটিহার স্পেশাল প্যাসেঞ্জার। যানজটে যদি পৌনে আটটার মধ্যে স্টেশনে না পৌঁছোতে পারেন, তবে আজকের অফিস টাইম শেষ!
না, ওঁদের জন্য হাওড়া-বনগাঁ লোকাল, ক্যানিং লোকাল, পাঁশকুড়া লোকাল, আগরতলা লোকাল, শিয়ালদা-বারুইপাড়া, বর্ধমান-হাওড়া, হাওড়া-ব্যান্ডেল, খড়্গপুর-হাওড়ার মতো একাধিক লোকাল ট্রেন নেই। চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, ভালুকা, সামসীর যাত্রীদের ভরসা বলতে সেই শিলিগুড়ি ডেমু অথবা মালদা টাউন কাটিহার স্পেশাল প্যাসেঞ্জার।
প্রথমটা মালদা কোর্ট স্টেশন থেকে ছাড়ে সকাল সাড়ে ৬টায়, দ্বিতীয়টা মালদা টাউন স্টেশন থেকে সকাল ৮টা নাগাদ। ৮টার ট্রেন শহরবাসীর কাছে কিছুটা স্বস্তির হলেও কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে ততটাই আতঙ্কের।
কথা হচ্ছিল শান্তনু মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুরের একটি স্কুলের ইনচার্জের দায়িত্বে। কালিয়াচক থেকে রোজ কাটিহার প্যাসেঞ্জারে তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর যাতায়াত করেন। অফিস যাওয়ার একমাত্র ট্রেন এটি থাকায় সেই ভোরবেলা বেরিয়ে ট্রেন ধরতে হয় তাঁকে। কিছুদিন যানজটে আটকে চোখের সামনে দেখেছেন, ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তাঁর মতো একই অবস্থা সামিউলদেরও। প্রত্যেকের মুখে একটাই আক্ষেপ, ‘লোকাল ট্রেন নেই। তাই রোজ কষ্ট করে যাতায়াত করি। কিন্তু এই কষ্ট কতদিনের তা জানেন না কেউ।