এপ্রিলের রোদ যেমন এখনই গায়ে পড়ছে, তাতে মে মাসের গ্রীষ্মের কথা ভাবলেই ভয় লাগছে। রোদ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে বাইরে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি। তবে সানস্ক্রিন সারা দিন একবারে কাজ করে না। সঠিক নিয়ম মেনে, দিনে অন্তত দু’ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন লাগানো উচিত, যা বেশিরভাগ মানুষের জন্য সম্ভব হয়ে ওঠে না। এছাড়া, যদি সানস্ক্রিনের ক্ষমতা কম হয় এবং রোদের মধ্যে বেশি সময় কাটাতে হয়, তবে ত্বকে ট্যান, ব্রণ, ফুস্কুড়ি বা র্যাশের মতো সমস্যা হতে পারে।
তাহলে, রোদের ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সুস্থ রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন এবং রোদের পর শীতল পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। বিশেষ প্যাক বা মাস্ক ব্যবহার করেও ত্বককে শীতল ও সতেজ রাখা যায়। সঠিক যত্ন ও সতর্কতার মাধ্যমে রোদের প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করা সম্ভব।
প্রাতরাশে যে ওট্স খাওয়ার অভ্যাস আছে, তা ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। ওট্সে প্রচুর প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের লালচে ভাব এবং ব্রণ, ফুস্কুড়ি বা র্যাশের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। রোদের তাপে পুড়ে যাওয়া ত্বককে মেরামত করতেও এটি কার্যকর। এক কাপ ওট্স মিক্সিতে গুঁড়িয়ে মিহি গুঁড়ো তৈরি করে ঠান্ডা জলে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর হাতে, পায়ে বা মুখে মাখুন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বুঝতে পারবেন ত্বক ভিতর থেকে ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে এবং ত্বক অনুভূত হবে প্রশান্ত।
দইয়ের মধ্যে থাকা প্রোবায়োটিক এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড রোদের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের ক্ষতি মেরামত করতে কার্যকর। মুখ, হাত বা পায়ে সরাসরি দই মাখুন। ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক হবে স্নিগ্ধ এবং আরামদায়ক, আর রোদের প্রভাব থেকেও মুক্তি পাবেন।
খারাপ আবহাওয়া এবং তীব্র রোদ থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা। আর সেই কাজে সাহায্য করতে পারে মধু। মধু ত্বককে আর্দ্র রাখার পাশাপাশি এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণও ব্রণ বা ফুস্কুড়ি কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের ট্যান পড়া অংশে মধুর পুরু স্তর লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। হয়তো কিছুটা চটচটে লাগবে, কিন্তু এই অল্প অস্বস্তির জন্য যে উপকার হবে, সেটা অনেক বেশি।
গ্রিন টি বা সাধারণ চায়ের পাতা ফেলে না দিয়ে, চা তৈরির পরে রেখে দিন। চায়ের পাতায় থাকা ট্যানিন্স নামের উপাদান ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং আর্দ্রতা ও পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে। আপনি চায়ের পাতা ছাড়াও ব্যবহৃত টিব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। ট্যান পড়া ত্বকের ওপর ঠান্ডা টিব্যাগ ধীরে ধীরে বুলিয়ে দিন। এছাড়া, ব্যবহৃত চায়ের পাতায় তুলো ভিজিয়ে তা মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন। এই সহজ পদ্ধতিতে ত্বক রোদের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে এবং স্নিগ্ধতা ফিরে পাবে।
ত্বককে আর্দ্র রাখার জন্য নারকেল তেল অন্যতম সেরা উপায়। তবে নারকেল তেল ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো ঘুমোনোর আগে, ত্বক ঠান্ডা হওয়ার পরে। আপনি চাইলে নারকেল তেল লাগানোর আগে মুখে বরফও ঘষতে পারেন, যা ত্বককে আরও স্নিগ্ধ এবং শান্ত রাখবে। নিয়মিত এই রুটিন অনুসরণ করলে ত্বক থাকবে সুস্থ এবং রোদের প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে।