Civic Volunteer 2024: বর্তমানে রাজ্যের বহু তরুণ-তরুণী সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিশেষ করে এই পেশার গুরুত্ব এবং মর্যাদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজের সরকারি স্বীকৃতি এবং বেতন বৃদ্ধি তাদের আকর্ষণ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন তো সিভিক ভলান্টিয়ারদের রাজ্য সরকার সরাসরি পুলিশের কনস্টেবল হিসেবেও নিয়োগ করছে। এই অবস্থায় কেউ যদি সিভিক ভলান্টিয়ার হতে চান, তবে তার কি কি যোগ্যতা থাকা উচিত? নিয়োগ প্রক্রিয়া কেমন হবে? এবং বেতন কাঠামো কীভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে? এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের আলোচনা।
Table of Contents
civic volunteer application form 2024
পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বর্তমানে রাজ্যজুড়ে প্রায় ১,২৩,৬৯৬ জন সিভিক ভলান্টিয়ার(Civic Volunteer) কাজ করছেন। যার মধ্যে কলকাতার জন্য নির্ধারিত হয়েছে ৭,২১৮ জন এবং বাকি ১,১৬,৪৭৮ জন রাজ্য পুলিশের অধীনে কাজ করছেন। তবে এই ব্যাপক নিয়োগের পর থেকেই তাদের বেতন, কাজের ধরন এবং কর্মক্ষেত্রে আসল ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। অনেকেই জানতে চান, সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য কী ধরনের কাজ নির্ধারিত, তাদের বেতন কাঠামো কেমন, এবং ভবিষ্যতে তাদের জন্য আরও কী সুযোগ রয়েছে।
সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের প্রক্রিয়া ও যোগ্যতা
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের জন্য একটি বিশেষ নির্দেশিকা চালু করে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, মাধ্যমিক পাশ করলেই একজন ব্যক্তি সিভিক পুলিশ পদে আবেদন করতে পারতেন। বয়সের সীমা রাখা হয়েছিল ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। বিশেষ অগ্রাধিকার পেতেন তাঁরা, যাঁদের এনসিসি, খেলাধুলা, বা সিভিক ডিফেন্সের অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে এই নিয়মে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক থেকে কমিয়ে অষ্টম শ্রেণি করা হয়।
সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতন
বর্তমানে কলকাতা পুলিশের অধীনে থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারদের(Civic Volunteer) মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা। যদিও বেতন নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে, কারণ তাঁদের ট্রাফিক গার্ড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও বাস্তবে তাঁদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা থেকে শুরু করে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, এবং বিভিন্ন উৎসব বা বড় ইভেন্টের সময় জনসমাবেশ সামলানো পর্যন্ত বহু ধরনের কাজ করতে হয় তাঁদের।
সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগের চ্যালেঞ্জ
সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজের ব্যাপারে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ার(Civic Volunteer) নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কঠোর অবস্থান নেয়। এরপর রাজ্য সরকারকে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের প্রক্রিয়া এবং নিয়মকানুন সম্পর্কে হলফনামা জমা দিতে বলা হয় এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহারে স্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ অনুসারে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের মূলত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজেই নিয়োগ করার কথা। তবে বাস্তবে দেখা যায়, তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মতো আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিযুক্ত করা হয়, যা নিয়মের বাইরে।
সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া, বেতন এবং কাজের ধরন নিয়ে রাজ্যের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকে মনে করছেন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের মূল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ থেকে সরিয়ে অনেক কঠিন এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, যা তাঁদের প্রয়োজনীয় দক্ষতার বাইরে। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিধি এবং বেতন কাঠামোতে রাজ্য সরকারকে নতুন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।