Egg: ডিম আগে না মুরগি, এই জটিল প্রশ্নের উত্তর যেমন এখনও নির্ধারিত হয়নি, তেমনই ডিম আমিষ নাকি নিরামিষ?—এই বিতর্কও কম নেই। তবে অবশেষে বিজ্ঞানীরা আমাদের সকলের প্রিয় এই খাবারটির আসল অবস্থান সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন। আসুন, জেনে নিই তাদের বিশ্লেষণ!
নিয়মিত খাবারের তালিকায় ডিম থাকে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন। কিন্তু অনেকেই আমিষ হিসেবে ডিম থেকে সরে থাকেন, কারণ ডিম তো মুরগির শরীর থেকে তৈরি হয় এবং মুরগি তো একটি জীবন্ত প্রাণী। তাই অনেকের মনে হয়, ডিম আমিষ। তবে এই বিষয়ে অন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, যা ভাবার মতো। আসুন, ডিমের আসল অবস্থান সম্পর্কে একটু গভীরভাবে চিন্তা করি।
দীর্ঘদিনের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ডিম আসলে আমিষ নয়, বরং নিরামিষ। তাদের মতে, ডিমের তিনটি মূল অংশ রয়েছে: খোসা, কুসুম এবং সাদা অংশ। গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের সাদা অংশটি পুরোপুরি প্রোটিন দিয়ে তৈরি, কুসুমে পাওয়া যায় প্রোটিন এবং কোলেস্টেরল।
এছাড়াও, বাজারে যেসব ডিম পাওয়া যায়, সেগুলো সাধারণত অনিষিক্ত হয়, অর্থাৎ এতে কোনো ভ্রূণ থাকে না। তাই, এই ডিম খাওয়ার মাধ্যমে জীব হত্যার দায়ে দুষ্টু হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
ভারতে ডিম নিরামিষ নয় কেন?
মনে রাখবেন, ডিমগুলি নিরামিষ হলেও, সেগুলি কোনভাবেই ভেগান হিসাবে বিবেচিত হয় না। বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে ভারতে, অনেকের কাছে ডিমকে প্রকৃতপক্ষে মাংসের অংশ হিসেবেই ধরা হয়। ফলে কিছু নিরামিষাশী ব্যক্তিরা এগুলি খেতে আগ্রহী হন না।
এই ব্যাপারটি মূলত ধর্মীয় অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত, যেমন হিন্দুধর্মে খাবারের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। তাই যদি আপনি নিরামিষ খাবারের দিকে ঝুঁকছেন, তাহলে ডিমের ব্যাপারে নিশ্চিত হন যে এটি আপনার খাদ্যাভ্যাসের সাথে মানানসই কি না!
ডিম(Egg) কি ধরনের খাবার?
ডিম হল একটি সহজলভ্য এবং উচ্চমানের আমিষজাতীয় খাদ্য, যা প্রাকৃতিক ভিটামিনের সাথে ভরপুর। এই ভিটামিনগুলি আমাদের দেহ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সব ধরনের ডিমে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডও রয়েছে, যা আমাদের হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং, ডিম খেলে শরীরের জন্য এর উপকারিতা অনেক, এবং এটি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত!”
ডিম আমাদের শরীরের পক্ষে কতটা ভাল
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিম আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন এ, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিংক এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। সম্প্রতি করা গবেষণায় জানা গেছে, প্রতিদিন ডিম খেলে বিভিন্ন ধরনের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তাই, স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকায় ডিমকে রাখতে ভুলবেন না!
এছাড়াও, ডিম(Egg) মূলত প্রোটিন এবং ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েটে ডিম রাখতে বলা হয়। তবে, একদিনে কতগুলি ডিম খাওয়া উচিত, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে দুটো এবং বাচ্চাদের জন্য একটি ডিম উপযুক্ত। তবে, যা-ই হোক, ডিমের সবচেয়ে লোভনীয় অংশ হল কুসুমটি, যা খেতেও দারুণ স্বাদ।
প্রতিদিন ডিম খাওয়া কি স্বাস্থ্যর জন্য ভালো?
প্রতিদিন একটি সিদ্ধ ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যর জন্য উপকারী। ডিমের কুসুম, যা অপেক্ষাকৃত হলুদ অংশ, স্বাস্থ্যকর পুষ্টি উপাদানের দিক থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। যদিও ডিমের সাদা অংশে অ্যালবুমিন থাকে, তা অতটা উপকারী নয়।
ডিমের মোট ৩৪% অংশ হল কুসুম, যেখানে বেশিরভাগ স্নেহ পদার্থ এবং কিছু প্রোটিনও রয়েছে। একটি বড় ডিমের কুসুমে প্রায় ৫০ ক্যালোরি থাকে, যা একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান হিসেবে গণ্য করা হয়।
এছাড়াও, ডিমের(Egg) কুসুমে রয়েছে ভিটামিন B6, B12, ফলিক অ্যাসিড, pantothenic acid এবং থিয়ামিন। সম্পূর্ণ ডিমের ভিটামিন A, D, E এবং K-এর অধিকাংশই কুসুমেই থাকে। তাই ডিমের কুসুমকে অবহেলা না করে, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত!