পশ্চিমবঙ্গসহ সারা দেশের কৃষকদের জন্য ডিজিটাল কৃষক আইডি কার্ড (Farmer ID Card) চালুর ঘোষণা করা হয়েছে। এটি ভারতের কৃষকদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করতে চলেছে। কৃষকদের আর্থিক উন্নতি নিশ্চিত করা এবং সরকারি প্রকল্পের সুবিধাগুলি আরও সহজে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। এই PM Kisan আইডি কার্ডের মাধ্যমে কৃষকরা সরাসরি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে অন্যতম প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প, যার আওতায় বছরে ৬,০০০ টাকা অনুদান প্রদান করা হবে।
কৃষক আইডি কার্ড কী এবং এর সুবিধা কী?
এই ডিজিটাল কৃষক আইডি কার্ড হবে আধার-লিঙ্কড এবং সম্পূর্ণ অনলাইনে সংরক্ষিত থাকবে। এর ফলে কৃষকদের জমির তথ্য, ফসলের বিবরণ, পশুসম্পদ সম্পর্কিত তথ্য সহজেই সংরক্ষণ করা যাবে। এই কার্ড শুধু একটি পরিচয়পত্র নয়, বরং এটি কৃষকদের জন্য একটি বহুমুখী সুবিধা সম্পন্ন কার্ড, যা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। কৃষকদের আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি ও অন্যান্য সুবিধা সরাসরি এই কার্ডের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে।
কৃষক আইডি কার্ড এর সুবিধা
ডিজিটাল কৃষক আইডি কার্ড কৃষকদের জন্য একাধিক সুবিধা নিয়ে আসছে। এই কার্ডের মাধ্যমে তারা সরাসরি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও আর্থিক সহায়তার সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। নিম্নলিখিত সুবিধাগুলি এই কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া যাবে—
৬,০০০ টাকা বার্ষিক অনুদান – প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি (PM-KISAN) প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা সরাসরি বছরে ৬,০০০ টাকা পাবেন।
কৃষক ক্রেডিট কার্ড (KCC) সুবিধা – কম সুদে কৃষিঋণ পেতে সহায়তা করবে, যা চাষাবাদ ও কৃষি উন্নয়নে সাহায্য করবে।
ন্যূনতম সহায়তা মূল্য (MSP) নিশ্চিতকরণ – কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হবে, ফলে বাজারে মূল্য ওঠানামার প্রভাব কমবে।
সরকারি প্রকল্পের তথ্য এক জায়গায় – বিভিন্ন কৃষি সংক্রান্ত সরকারি প্রকল্পের তথ্য সহজেই পাওয়া যাবে, যা আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে কৃষি উপকরণ কেনার সুবিধা – আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বীজ, সার ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজেই কেনা যাবে, যা কৃষিকাজকে আরও উন্নত করবে।
কৃষক আইডি নাম্বার কিভাবে পাবো?
২০২৭ সালের মধ্যে ১১ কোটি কৃষককে আইডি কার্ড প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৭ সালের মধ্যে ১১ কোটি কৃষককে এই ডিজিটাল কৃষক কার্ড প্রদান করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। গুজরাট, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা ইতিমধ্যেই এই কার্ডের সুবিধা পেতে শুরু করেছেন। অন্যদিকে, আসাম, ওড়িশা, ছত্তীসগড় এবং পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্প এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে।
কৃষক বন্ধু আইডি কিভাবে পাবো?
সরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ শিবিরের মাধ্যমে কৃষকদের রেজিস্ট্রেশন করা হবে। এছাড়া, অনলাইনের মাধ্যমেও কৃষকরা এই আইডির জন্য আবেদন করতে পারবেন। কৃষকদের শুধুমাত্র আধার কার্ড, জমির দলিল এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য জমা দিতে হবে। এই কার্ড পেতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষক সহায়ক ওয়েবসাইটে যান।
নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে লগইন করুন।
যাচাইয়ের জন্য মোবাইলে একটি OTP পাঠানো হবে।
যদি OTP না আসে, তাহলে ভবিষ্যতে লগইনের জন্য একটি PIN সেট করুন।
আপনার মোবাইল নম্বরই হবে কৃষক আইডি, আর PIN হবে পাসওয়ার্ড।
লগইন করার পর সমস্ত তথ্য দেখতে পারবেন।
সরকার আপনার তথ্য যাচাই করার পর এই প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করবে।