নেশা ছাড়াতে জানলায় বেঁধে নগ্ন করে মারধর! নেশামুক্তি কেন্দ্রে রোগীর উপর অমানবিক আচরণের অভিযোগ আবার সামনে এল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের এক কেন্দ্রে ১৪ বছরের এক নাবালককে শারীরিকভাবে নির্যাতন করার ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ, নেশামুক্তি কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন নাবালককে জানলায় গামছা দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এবং তার পরনের পোশাক খুলে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারের চোটে নাবালক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর আগে একই এলাকার আরেকটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে রোগীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। বুধবারের ঘটনায় পুলিশের তরফে ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বারুইপুর থানার পুলিশ নেশামুক্তি কেন্দ্রটি আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের হাতে একটি ভিডিয়ো আসে, যেখানে এক নাবালককে নির্যাতনের দৃশ্য ধরা পড়ে। ওই ভিডিয়ো দেখে সংশ্লিষ্ট নেশামুক্তি কেন্দ্রটি চিহ্নিত করে বারুইপুর থানার পুলিশ। দ্রুত সেখানে অভিযান চালিয়ে নাবালককে উদ্ধার করা হয় এবং তাকে অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশ ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে একজনকে গ্রেফতার করেছে।
বারুইপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাজার এলাকায় থাকা নেশামুক্তি কেন্দ্রেই ঘটেছে এই অমানবিক ঘটনা। অভিযুক্ত পার্থ চক্রবর্তীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১১ মাস ধরে কেন্দ্রটি চালু ছিল। আর যে নাবালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, তাকে মাত্র ২৬ দিন আগে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিল।
নেশামুক্তি কেন্দ্রটি একটি ভাড়া বাড়িতে চলত। সেই বাড়ির মালিক শিবুপ্রসাদ সাহা জানান, ‘‘১১ মাস আগে পার্থ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তিকে বাড়ি ভাড়া দিয়েছিলাম। তখন জানতে পারি তাঁরা নেশামুক্তি কেন্দ্র চালাবেন। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম, সেখানে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘পুলিশের নির্দেশ অনুযায়ী আমি ওই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়েছি এবং থানায় যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কেন্দ্রের কার্যকলাপ নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছিল, তবে এত বড় ঘটনার পর পুলিশি হস্তক্ষেপে বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।