Pre Winter Hair Care: এখনও উত্তুরে হাওয়া বঙ্গে না ঢুকলেও শীতে চুল বেশি ঝরে। তাই আগে থেকে সাবধান হওয়া দরকার। শরৎ আর শীতের এই সন্ধিক্ষণে কী ভাবে চুলের যত্ন নেওয়া জরুরি?
পুজোর চার দিনে নিত্যনতুন পোশাকের সঙ্গে চুলের সাজেও চমক রেখেছেন সবাই। স্ট্রেটনার, ড্রায়ার, কার্লার— কিছুই ব্যবহার করতে বাদ রাখেননি। পুজোর সাজগোজে নায়িকাদের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে বেশ কিছুটা ভিন্নতা আনলেও, পরে যে হারে চুল ঝরছে, তাতে বিষন্নতায় ডুবেছে মন।
এদিকে, শরৎ শেষে এখন শীতের পালা। যদিও এখনও উত্তুরে হাওয়া বঙ্গে প্রবেশ করেনি, শীতে চুলের ঝরা বাড়ে অনেকটাই। তাই আগে থেকে সাবধান হওয়া খুব জরুরি। শরৎ আর শীতের এই সন্ধিক্ষণে কীভাবে চুলের যত্ন নেওয়া উচিত, তা নিয়ে কিছু সহজ টিপস জেনে নেওয়া যাক।
Table of Contents
Pre Winter Hair Care: শরৎ ঋতুতে চুল পড়া কমানোর টিপস
- সারা বছর চুলে তেল ব্যবহার না করলেও এই সময় শ্যাম্পু করার পর অতি অবশ্যই তেল মাখুন। এতে চুল পুষ্টি পাবে, গোড়া মজবুত হবে এবং চুল ঝরার পরিমাণও কমবে। তেলের এই উপকারিতা নিশ্চিত করবে আপনার চুলের ঔজ্জ্বল্যও বজায় থাকবে। শীতকালীন বাতাসে চুলের ক্ষতি এড়াতে নিয়মিত তেল লাগানো অনেকটাই সহায়ক।
- গরম জলে স্নান করলে চুল না ধোয়াই ভালো। গরম জল চুলের সমস্ত আর্দ্রতা শোষণ করে নেয়, যার ফলে চুল আর্দ্রতা হারিয়ে আরও বেশি রুক্ষ হয়ে পড়ে। তাই গরম জল দিয়ে চুল ধোয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ঠাণ্ডা বা মিশ্র জলে ধোয়া অনেক বেশি উপকারী, কারণ এটি চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- শ্যাম্পু করার পর অনেকেই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভোলেন। কিন্তু এই সময়ে এই অভ্যাস বজায় রাখা মোটেও উচিত নয়। শীতে চুল অনেক বেশি আর্দ্রতা হারাতে থাকে, তাই কন্ডিশনার ব্যবহার করা জরুরি। এটি চুলকে খানিকটা নরম এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। সুতরাং, ভুলে যাবেন না, শীতকালে কন্ডিশনার ব্যবহার করা একেবারেই অঙ্গীকার।
- বাজারচলতি প্রসাধনীর ব্যবহার চুলের যত্ন নেওয়ার একমাত্র উপায় নয়। চুল ভালো রাখতে খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দেওয়াও খুব গুরুত্বপূর্ণ। চুলের গোড়া শক্ত এবং মজবুত করতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খান। যেমন কাঠবাদাম, কাজু এবং কুমড়োর বীজ— শীত আসার আগে এই খাবারগুলো বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং আপনার চুল আরও স্বাস্থ্যকর দেখাবে। তাই চুলের যত্নে খাবারের ভূমিকা ভুলবেন না! (আরও পরুনঃ Detox Drink for Skin: ৫৫ বছরেও টানটান জেল্লাদার ত্বক! )
শরৎকালে চুল পড়া কেন বেড়ে যায়?
শরতের সময় তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা পরিবর্তিত হয়। শুষ্ক বাতাস চুলের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়, ফলে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেকের অ্যালার্জির সমস্যা থাকে, যেমন ধূলা বা পলির কারণে। অ্যালার্জির ফলে মাথার ত্বকে খুশকি এবং চুল পড়ার সমস্যা বাড়তে পারে। শরৎকালে কিছু মানুষ বিশেষ খাবার খাওয়া কমিয়ে দেন, যার ফলে শরীরে পুষ্টির অভাব হতে পারে। পুষ্টির অভাবে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয় এবং ঝরতে শুরু করে।
চুলের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন
ভিটামিন ও খনিজের অভাব চুলের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে, যেমন চুল পড়া, মলিনভাব, আগা ফাটা এবং শুষ্কতা। এই সমস্যাগুলি থেকে মুক্ত থাকতে হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে সঠিক পুষ্টির অভ্যাস থাকতে হবে।
ভারতের ‘ওজিভা’ নামক উদ্ভিজ্জ উপাদান দিয়ে তৈরি প্রসাধনীর প্রতিষ্ঠানটির পুষ্টিবিদ শিখা দ্বিভেদি সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়া ডটকম’য়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভিটামিন ও খনিজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, নিয়মিত প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ গ্রহণ করলে চুল আরও স্বাস্থ্যবান ও মজবুত থাকবে।
- ভিটামিন এ: দেহ সঠিকভাবে কাজ করতে এবং চুল ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন এ আমাদের ত্বকের গ্রন্থিগুলোকে সিবাম নামে একটি তেল উৎপাদন করতে সাহায্য করে।যা মাথার ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া, ভিটামিন এ ‘ফ্রি রেডিকেল’য়ের বিরুদ্ধে কাজ করে, ফলে চুলের চিটচিটেভাব কমে যায়। তাই, চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
গাজর, পেঁপে, লাল মরিচ, মিষ্টি আলু, টমেটো, কলি, পালংশাক— এই সব খাবারে ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এগুলো আমাদের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে চুল এবং ত্বক উভয়ের জন্যই উপকারী হবে।
- ভিটামিন বি: চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুলের বৃদ্ধিতে বায়োটিন সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মূলত শস্য, পাতাবহুল সবজি, বাদাম ইত্যাদিতে পাওয়া যায়
বায়োটিন পানিতে দ্রবণীয়, যা প্রাকৃতিকভাবে চুলের ফলিকলকে মজবুত করতে সাহায্য করে। এর ফলে চুলের বৃদ্ধি ঘটে এবং ক্ষতি পূরণ হয়। বায়োটিন কেবল চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে না, বরং এটি চুলের বৃদ্ধি ও উজ্জ্বলতাও বাড়ায়।
সুতরাং, যদি আপনি আপনার চুলকে স্বাস্থ্যবান ও সুন্দর রাখতে চান, তাহলে বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। এটি আপনার চুলের জন্য একটি দারুণ সহায়ক!