ট্রেনে ভ্রমণ মানেই এক অন্যরকম আনন্দ! আর আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে ট্রেনকেই বেছে নেন। কারণ ট্রেনযাত্রা এখন আগের তুলনায় আরও সহজ এবং আরামদায়ক হয়ে উঠেছে। তবে ট্রেনে উঠতে হলে অবশ্যই টিকিট থাকা চাই। বিশেষ করে দূরপাল্লার সফরে যাত্রীদের আগে থেকেই টিকিট কেটে রাখা নিরাপদ মনে হয়, যাতে যাত্রার দিন কোনো ঝামেলা না হয়। কিন্তু যদি কোনো কারণে আপনি নির্ধারিত ট্রেনে উঠতে না পারেন, তখন কী হবে? অনেকেই ভাবেন, “এবার তো টিকিটটা একেবারেই কাজে লাগবে না!” চিন্তা করতে করতে মাথায় হাত পড়ে যায়! কিন্তু সত্যিই কি আপনার টিকিট একেবারে মূল্যহীন হয়ে গেল? নাকি এর অন্য কোনো সমাধান আছে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে এবং রেলের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে, আজকের এই আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়ে নিন!
যদি আপনি আপনার ট্রেন মিস করেন, তাহলে কি আপনি একই টিকিট ব্যবহার করে অন্য অন্য ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন? নাকি নতুন করে আবার টিকিট কিনতে হবে? অনেকেই সঠিক রেলওয়ের নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতীয় রেলের নিয়ম ঠিক কী কী।
ট্রেন মিস করলে কী করা উচিত?
ট্রেন মিস করা যে কোনো যাত্রীর জন্যই বেশ হতাশাজনক অভিজ্ঞতা হতে পারে। প্রথমেই মাথায় আসে—“আমি কি টাকার ফেরত (রিফান্ড) পাব?” এরপরই আরেকটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে—“এই টিকিট দিয়েই কি অন্য কোনো ট্রেনে উঠতে পারবো?” রেলের নিয়ম অনুযায়ী, এর উত্তর পুরোপুরি নির্ভর করে আপনার টিকিটের ধরন ও শর্তের ওপর। তাই চিন্তিত হওয়ার আগে জেনে নিন, আপনার টিকিট মিস করলে কী কী সুযোগ পেতে পারেন এবং কীভাবে ক্ষতি কমানো সম্ভব! যদি আপনার একটি সাধারণ টিকিট থাকে, তাহলে আপনি একই ক্যাটাগরির অন্য ট্রেনে কোনও সমস্যা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে, যদি আপনি অন্য ক্যাটাগরির ট্রেনে চড়তে চান, তাহলে আপনাকে জরিমানা দিতে হতে পারে।
মেইল-এক্সপ্রেস, সুপারফাস্ট, রাজধানী এবং বন্দে ভারত এর মতো ট্রেনগুলিতে সাধারণ টিকিটে ভ্রমণের অনুমতি নেই। আপনি যদি সাধারণ টিকিটে এই প্রিমিয়াম ট্রেনগুলিতে ভ্রমণ করার চেষ্টা করেন, তাহলে টিটিই আপনাকে টিকিটবিহীন যাত্রী হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন এবং জরিমানা আরোপ করতে পারেন।
আপনার কাছে যদি একটি রিজার্ভড টিকিট থাকে এবং কোনো কারণে আপনি আপনার নির্ধারিত ট্রেন মিস করেন, তাহলে দুঃখের বিষয়—আপনি সেই একই টিকিট ব্যবহার করে অন্য কোনো ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। অনেকে মনে করেন ট্রেন মিস করলেও পরে অন্য ট্রেনে উঠে পড়া যায়। কিন্তু বাস্তবে যদি আপনি এই চেষ্টা করেন এবং ধরা পড়েন, তাহলে টিটিই আপনাকে টিকিটবিহীন যাত্রী হিসেবে গণ্য করবেন। এর ফলে আপনাকে জরিমানা গুনতে হতে পারে। তাই ট্রেন ধরতে দেরি হয়ে গেলে, কী করবেন এবং কী করবেন না—তা ভালোভাবে জানা দরকার!
এদিকে জরিমানা দিতে না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, এমনকি আপনার জেল অবধি হতে পারে। অতএব, সঠিক পদ্ধতি হল টিডিআর ফাইল করে টাকা ফেরতের জন্য আবেদন করা এবং অন্য ট্রেনের জন্য একটি নতুন টিকিট কেনা।
ট্রেনের টিকিট বাতিল এবং ফেরতের নিয়ম
১) বাতিল তৎকাল টিকিটের জন্য কোনও টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, যদি আপনি তৎকাল টিকিট বাতিল করেন, তবে কোনও রিফান্ড পাওয়া যাবে না।
২) যদি ট্রেন ছাড়ার ৪৮ থেকে ১২ ঘণ্টা আগে আপনি টিকিট বাতিল করেন, তাহলে টিকিটের মূল্য থেকে ২৫% বাতিলকরণ ফি কেটে নেওয়া হবে।
৩) যাত্রার ১২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে টিকিট বাতিল করলে, ৫০% টাকা কেটে নেওয়া হবে।