বিদ্যুতের বিল পরিশোধে বাংলাদেশের জন্য আদানির চূড়ান্ত ডেডলাইন, বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি দিল আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত সংকট আরও গভীর হচ্ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও দেশজুড়ে অস্থিরতা কাটেনি। এরই মধ্যে শহর থেকে গ্রাম—প্রায় সব জায়গায় বিদ্যুতের সংকট চরমে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতির অন্যতম কারণ হলো আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বিশাল অঙ্কের বকেয়া পরিশোধ না করা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তবে নতুন করে বাংলাদেশ সরকারকে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে আদানি পাওয়ার, আর সময়সীমা আগের তুলনায় কিছুটা দীর্ঘ হওয়ায় দেশটি সাময়িক স্বস্তি পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশকে ফের ডেডলাইন বেঁধে দিল আদানি পাওয়ার
জানা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ ৮৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে। তবে পুরো বকেয়া শোধ করতে আরও সময় প্রয়োজন, তাই আদানি গ্রুপ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছে। পিডিবিকে পাঠানো এক চিঠিতে আদানি পাওয়ার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করলে বিলম্ব ফি প্রযোজ্য হবে। এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরের জন্যও আদানি একটি সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল এবং সেই সময়ে অর্থপ্রদানের জন্য চাপ বাড়াতে তাদের একটি ইউনিট বন্ধ পর্যন্ত করে দিয়েছিল। ফলে এবারও যদি বিল পরিশোধ নিয়ে দেরি হয়, তাহলে বাংলাদেশকে আরও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতে পারে।
টাকা পরিশোধ করবে বাংলাদেশ?
বিলে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে মতবিরোধের বিষয়টি সামনে এনেছেন পিডিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি জানিয়েছেন, আদানি তাদের চুক্তির নির্দিষ্ট একটি ধারা অনুসারে ব্যয় গণনা করে, অন্যদিকে পিডিবি প্রকৃত কয়লার দাম অনুযায়ী হিসাব করে। ফলে আদানি যেখানে বকেয়া হিসেবে ৮৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার দাবি করছে, সেখানে পিডিবির হিসাব অনুযায়ী বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি ডলার।
উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডের ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি গ্রুপের বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ০.১০০৮ ডলার বা প্রতি ইউনিট ১২ টাকা। এই হার ভারতের অন্যান্য বেসরকারি উৎপাদকদের হারের চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কারখানার চেয়ে প্রায় ৬৩ শতাংশ বেশি।