ঘুমানোর আগে রিলস দেখেন?: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন রিলসের দখলে! ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম—সব জায়গায় ছোট ছোট ভিডিওর জয়জয়কার। শুধু তরুণরাই নয়, সব বয়সীর কাছেই রিলস দারুণ জনপ্রিয়। আর রাতের বেলা ঘুমানোর আগে রিলস দেখা? অনেকেরই প্রতিদিনের অভ্যাস! কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাস আপনার শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে? শুধু মানসিক স্বাস্থ্যেরই নয়, বরং শারীরিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করছে রাতের এই স্ক্রলিং। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, রাতে ঘুমানোর আগে বেশি সময় ধরে রিলস দেখলে হাইপারটেনশনের (উচ্চ রক্তচাপ) ঝুঁকি বাড়তে পারে।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় চমকে দেওয়ার মতো তথ্য উঠে এসেছে! চীনের হেবেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ৪,৩১৮ জন বিভিন্ন বয়সী মানুষের ওপর একটি সমীক্ষা চালান। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল খুঁজে দেখা—ঘুমানোর আগে রিলস দেখার সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের (হাইপারটেনশন) কোনো সম্পর্ক আছে কি না। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ঘুমানোর আগে দীর্ঘ সময় ধরে রিলস দেখেন, তাদের হাইপারটেনশনের ঝুঁকি অনেক বেশি।
ঘুমানোর আগে রিলস দেখেন?
বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর রিলসের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে করোনাকালে শর্ট ভিডিওর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেন-জি ও জেন আলফার মনোযোগ ধরে রাখতে না পারার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রিলসের অতিরিক্ত ব্যবহার। একটানা স্ক্রলিং-এর ফলে সৃজনশীল চিন্তার পরিধি কমছে, স্থায়িত্বও কমে যাচ্ছে। অনেকেই ‘ব্রেন রট’ বা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার অনুভূতির শিকার হচ্ছেন। তবে এর চেয়েও ভয়ংকর প্রভাব পড়ে ঘুমানোর আগে রিলস দেখার ফলে।
একটানা স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা শরীরের জন্য কখনই ভালো নয়—হোক সেটা টেলিভিশন দেখা, ভিডিও গেম খেলা, কিংবা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করা। তবে এসব কাজের সময় অন্তত কিছুটা নড়াচড়া হয়। কিন্তু ঘুমাতে যাওয়ার আগে রিলস দেখার সময়? তখন শরীর একেবারে স্থির হয়ে যায়। অনেকেই আরামের জন্য বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে রিলস দেখতে থাকেন। কখন যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায় টেরই পান না। এই দীর্ঘসময় একভাবে থাকার ফলে শরীর হয়ে পড়ে আড়ষ্ট, রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যায়, যা ধীরে ধীরে হাইপারটেনশনের মতো সমস্যার দিকে ঠেলে দিতে পারে। তবে এভাবে দীর্ঘক্ষণ রিলস দেখার সময় শরীরের সিম্পেথেটিক নার্ভাস সিস্টেম কিন্তু আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ভিডিও দেখার সময় হৃৎস্পন্দন তুলনামূলক বেড়ে যায়। টানা একই কাজ করলে এর প্রভাব হতে পারে ভয়াবহ।
হেবেই মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা অবশ্য প্রতিকারের উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। যতই রিলস দেখুন না কেন, আসক্ত হয়ে পড়া চলবে না। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ‘স্ক্রিন টাইম’ ঠিক করে নিন। প্রয়োজনে মুঠোফোন দূরে রেখে ঘুমাতে যান। এতে ঘুম যেমন ভালো হবে, শরীরও ভালো বিশ্রাম পাবে।
ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতি
ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহার করা আজকাল অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাস আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে? গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল স্ক্রিনের নীল আলো এবং অতিরিক্ত স্ক্রলিং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, স্ট্রেস বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
রাতে রিলস দেখা কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?
রাতে ঘুমানোর আগে রিলস দেখা এখন অনেকের নিত্যদিনের অভ্যাস। কিন্তু এই অভ্যাস কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? বিশেষজ্ঞদের মতে, হ্যাঁ, রাতে রিলস দেখা শরীর ও মস্তিষ্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহারের ক্ষতি
রাতে ঘুমানোর আগে মোবাইল ব্যবহার এখন অনেকেরই নিত্যদিনের অভ্যাস। সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং, রিলস দেখা বা চ্যাটিং করতে করতে কখন যে সময় পেরিয়ে যায়, তা বোঝাই যায় না! কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাস আপনার ঘুম, মস্তিষ্ক ও শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে?