ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (Reserve Bank of India) সম্প্রতি দেশের সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করেছে, যা “India Safest Bank” হিসেবেও পরিচিত। এই তালিকাটি “Domestic Systemically Important Banks” বা সংক্ষেপে D-SIB নামে পরিচিত। এই ব্যাংকগুলো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যে, কোনো বড় অর্থনৈতিক সংকটের সময়ও এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই ব্যাংকগুলোতে যাদের অ্যাকাউন্ট আছে, তাদের টাকা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই।
Table of Contents
D-SIB তালিকা এবং এর গুরুত্ব (India Safest Bank)
RBI প্রথমবার ২০১৪ সালে D-SIB তালিকা প্রকাশের নিয়ম চালু করে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৫ সালে SBI, ২০১৬ সালে ICICI ব্যাংক, এবং ২০১৭ সালে HDFC ব্যাংক এই তালিকায় যুক্ত হয়। প্রতি বছর এই তালিকাটি আপডেট করা হয় এবং ব্যাংকের আকার, আর্থিক সংযোগ এবং সিস্টেমে তাদের ভূমিকা অনুযায়ী শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
RBI-এর মতে, D-SIB তালিকায় থাকা ব্যাংকগুলো দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। যদি এই ব্যাংকগুলো কোনো অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে, তবে এর প্রভাব পুরো দেশের অর্থনীতির ওপর পড়তে পারে। এজন্য, RBI এই ব্যাংকগুলোর জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান শর্ত হলো, বাড়তি মূলধন বজায় রাখা, যাতে যে কোনো সংকটের সময়ে তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
D-SIB তালিকায় থাকার যোগ্যতা
D-SIB তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে তাদের গুরুত্বের ভিত্তিতে অতিরিক্ত Common Equity Tier 1 (CET1) মূলধন এবং Capital Conservation Buffer (CCB) বজায় রাখতে হয়। RBI ব্যাংকগুলিকে তাদের আর্থিক গুরুত্ব অনুযায়ী তিনটি আলাদা ক্যাটেগরি বা বালতিতে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। ব্যাংক যত বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তত বেশি মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়।
ভারতের নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা
ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য কিছু ব্যাংককে “Domestic Systemically Important Banks” (D-SIB) বা নিরাপদ ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই তালিকায় থাকা ব্যাংকগুলো এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, কোনো বড় অর্থনৈতিক সংকটের সময়ও এই ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (SBI)
SBI (State Bank of India) ভারতের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। এটি D-SIB তালিকার সর্বোচ্চ ক্যাটেগরি বা বালতি 4-এ স্থান পেয়েছে। RBI-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, SBI-কে তার মোট মূলধনের অতিরিক্ত 0.80% Common Equity Tier 1 (CET1) মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এই বাড়তি মূলধন সংরক্ষণের মূল কারণ হলো, সংকটের সময়েও ব্যাংকটি যাতে স্থিতিশীল থাকে এবং গ্রাহকদের টাকা সুরক্ষিত থাকে।
আইসিআইসিআই ব্যাংক (ICICI Bank)
ICICI ব্যাংক D-SIB তালিকার বালতি 1-এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ক্যাটেগরির ব্যাংকগুলিকে তুলনামূলকভাবে কম অতিরিক্ত Common Equity Tier 1 (CET1) মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়, যা মাত্র 0.20%। ICICI ব্যাংক ভারতের অন্যতম বড় বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে পরিচিত এবং এটি গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের আর্থিক পরিষেবা প্রদান করে, যেমন লোন, ইনভেস্টমেন্ট, ক্রেডিট কার্ড, এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিং। যেহেতু এটি D-SIB তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, তাই RBI এই ব্যাংকটির উপর বিশেষ নজর রাখে।
এইচডিএফসি ব্যাংক (HDFC Bank)
HDFC ব্যাংক, দেশের অন্যতম বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক, D-SIB তালিকার বালতি 2-এ অন্তর্ভুক্ত। এই ক্যাটেগরির জন্য HDFC ব্যাংককে অতিরিক্ত 0.40% Common Equity Tier 1 (CET1) মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এটি মূলত ব্যাংকের স্থিতিশীলতা এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। HDFC ব্যাংক গ্রাহক পরিষেবার মান এবং আধুনিক প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য সুপরিচিত, যা এটিকে দেশের শীর্ষ ব্যাংকগুলোর একটি করে তুলেছে।