ভারতের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে পাকিস্তানের এই সিদ্ধান্ত! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চিনকে সামরিক নৌঘাঁটি ও বিমানবন্দর তৈরির জন্য জমি দিচ্ছে পাকিস্তান। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা আদিল রাজা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র ধরে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকার দক্ষিণ বেলুচিস্তানে চিনের সামরিক বিমানবন্দর ও নৌঘাঁটি তৈরির জন্য ৫ হাজার একর জমি বরাদ্দ করেছে।
সত্যিই কী চিনকে জমি দেবে পাকিস্তান?
বেশকিছু সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে আরব সাগরে ঘাঁটি গাড়তে চেয়েছিল চিন। তবে পরিস্থিতির ফাঁপরে পরে পছন্দসই কায়দায় জায়গা করে উঠতে পারছিল না তারা। শোনা যাচ্ছে, এবার চিনকে সেই সুযোগ করে দিল পাকিস্তান। কয়েকটি সূত্র দাবি করছে, পাকিস্তানের দক্ষিণ বেলুচিস্তানে কমপক্ষে 5 হাজার একর জমি চিনা বিমানবন্দর ও সামরিক নৌঘাঁটি তৈরির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, চিন ইতিমধ্যেই গোয়াদরে একটি বন্দর তৈরি করে ফেলেছে। যা ভারতের জন্য এক কথায় হুমকিস্বরূপ। এমতাবস্থায় পাকিস্তান যদি সত্যিই চিনকে বিমানবন্দর ও সামরিক নৌঘাঁটি তৈরির জন্য জায়গা দেয় সে ক্ষেত্রে ভারতের জন্য যথেষ্ট চাপের হবে।
পাকিস্তানের ঠিক কোন অংশে চিনকে জমি দেওয়া হচ্ছে?
বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান যে এলাকায় চিনকে বিমানবন্দর ও নৌঘাঁটি তৈরির জন্য জায়গা দিচ্ছে, তা গোয়াদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, তুরবাতের কাছে অবস্থিত। এই পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা আদিল রাজা একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, চিনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আগেই বেলুচিস্তানের জিওয়ানি অঞ্চলে চিনা সেনাদের জন্য বিমানবন্দর ও নৌঘাঁটি তৈরির খবর প্রচার করেছে। এছাড়া, যদি পাকিস্তান চিনকে জায়গা দেয়, তবে এটি গোয়াদরে চিনের সামরিক বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে যাবে, যার ফলে এই প্রকল্প বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালীর ওপর চিনের নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হবে।
ভারতকে ফ্যাসাদে ফেলতে পাকিস্তানের গভীর ষড়যন্ত্র!
চলতি বছরের বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে সন্ত্রাসবাদী দেশগুলির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা সুযোগ সন্ধানী পাকিস্তান, প্রতিটি মুহূর্তে ভারতের ওপর চাপ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে। গত বছর পাকিস্তান গোয়াদরে একটি সামরিক নৌ ঘাঁটি তৈরির জন্য চিনকে অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
পাকিস্তান জানত, গোয়াদরে চিনা নৌঘাঁটি বা বিমানবন্দরের মতো কোনও সামরিক ঘাঁটি তৈরি হলে তাদের জন্য আদতে কোনও লাভ হবে না। কিন্তু তবুও পাকিস্তান গোয়াদর বন্দর তৈরির জন্য চিনকে কোটি কোটি ডলার খরচের অনুমতি দেয়। গোয়াদর বন্দর চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার নির্মাণে পাকিস্তানের মাটিতে চিন কমপক্ষে 60 বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। এখন সেই পথ ধরেই পাকিস্তানকে সামরিক ঘাঁটি তৈরির জন্য ৫ হাজারেরও বেশি জায়গা দিতে চাপ দিচ্ছে চিন।
প্রসঙ্গত, ভারতকে কেন্দ্র করে চিন বন্দরের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চাইছে, যা “মুক্তার স্ট্রিং” নামে পরিচিত। এটি আসলে একটি চিনা তত্ত্ব, যার মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার ও ভারতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে চিনারা। “মুক্তার স্ট্রিং”-এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, পাকিস্তানের করাচি এবং গোয়াদর বন্দর, এবং শ্রীলঙ্কার কলম্বো ও হাম্বানটোট বন্দরগুলি।