মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুমকিতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সংঘাতের বাতাস বইছে। ইরানের বিরুদ্ধে যদি সত্যিই মার্কিন বাহিনী অভিযান শুরু করে, তাহলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে—সে নিয়ে এখন চলছে নানা হিসেব-নিকেশ। কে কার পক্ষে থাকবে, তা নিয়েও শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির নতুন সমীকরণ। এই টান টান উত্তেজনার মাঝেই সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দা তথ্য। জার্মান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নাকি বড় ধরনের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন!
আমেরিকা বারবার চেষ্টা করেছে রাশিয়াকে দুর্বল করে দিতে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, পুতিনের কৌশলী নেতৃত্বে উল্টো আমেরিকাকেই নানা জায়গায় কোণঠাসা করে দিয়েছে রাশিয়া। শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া আর আফ্রিকার অনেক দেশকেই নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্র বানিয়ে ফেলেছেন পুতিন।
সম্প্রতি রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিও হয়েছে, যেখানে ইরানকে অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম সরবরাহ করার কথা রয়েছে। এর ফলে সম্ভাব্য মার্কিন হামলার আগে তেহরানকে যেন মানসিকভাবে আরও শক্ত করে দিচ্ছে মস্কো। সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বরাজনীতির ময়দানে পুতিন এখনো খেলা জমিয়ে রেখেছেন।
জার্মান সামরিক গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের এমন বিশ্বাস জন্মেছে, ন্যাটো ও ইউরোপীয় দেশগুলোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। জার্মানির তিনটি গণমাধ্যম এ নিয়ে যৌথ তদন্ত প্রতিবেদন করে, তার ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পশ্চিমের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাত হতে পারে, এমনটাই ভাবছে রাশিয়া। একইসঙ্গে সেই অনুযায়ী আগাম প্রস্তুতিও নিচ্ছেন পুতিন।
এই মুহূর্তে রাশিয়ার পক্ষে ন্যাটোর কোনো দেশ বা একাধিক দেশের বিরুদ্ধে সরাসরি বড় পরিসরের যুদ্ধ চালানো সম্ভব নয় — এমনটাই বলছেন বেশিরভাগ সামরিক বিশ্লেষক। তবে লিথুয়ানিয়ার স্পেশাল সার্ভিস ভিএসডি এক ধাপ এগিয়ে বলছে, সীমিত পরিসরে হলেও মস্কো এখনই কোনো ন্যাটো দেশের বিরুদ্ধে সামরিক অ্যাকশনে যেতে সক্ষম।
এদিকে জার্মানির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি’র মতে, পুতিন আসলে একটা ‘পরীক্ষা’ নিতে চাইছেন— যদি কোনো ছোট ন্যাটো দেশ আক্রমণের মুখে পড়ে, তখন জোটের অন্য সদস্যরা কতটা দ্রুত এবং আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসে সেই সহযোগিতায়? মানে, ন্যাটোর ঐক্য আর দায়বদ্ধতার ওপর পুতিনের সন্দেহ রয়েছে বলেই মনে করছে তারা।