সুইজারল্যান্ডে ২০২১ সালের গণভোটে পাস হওয়া একটি আইনের ভিত্তিতে জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ। সেই নিয়মের প্রথম প্রয়োগ ঘটল এবার—দেশটির কর্তৃপক্ষ বোরকা পরার কারণে এক নারীকে জরিমানা করেছে। সোমবার (২৪ মার্চ) রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, আইন কার্যকর হওয়ার পর এটিই প্রথমবার, যখন কাউকে বোরকা পরার জন্য শাস্তির মুখোমুখি হতে হলো। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিসরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডে মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইভাবে, বিক্ষোভকারী বা ক্রীড়াপ্রেমী যারা মুখোশ বা বালাক্লাভা পরেন, তাদের ক্ষেত্রেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য। তবে, এই আইনে কিছু বিশেষ ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে। যেমন, যদি স্বাস্থ্যগত কারণে প্রয়োজন হয়, খুব ঠান্ডা আবহাওয়ার সময়, কার্নিভ্যালের মতো উৎসবের অংশ হিসেবে, ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে কিংবা কূটনৈতিক বা সাংস্কৃতিক পারফরম্যান্সের সময় মুখাবরণ পরা অনুমোদিত থাকবে।
সুইস পুলিশের মুখপাত্র ওয়াকার আরও জানিয়েছেন যে, গোপনীয়তা আইনের কারণে ওই নারীর বয়স বা তার পরনের পোশাক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, ওই নারী সুইজারল্যান্ডেরই বাসিন্দা, কোনো পর্যটক নন।
দেশটির আইন অনুযায়ী, প্রথমবারের লঙ্ঘনে জরিমানা ১০০ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ১১০ ডলার), তবে যদি আদালতে মামলা করা হয়, তাহলে জরিমানার পরিমাণ বেড়ে ১,০০০ সুইস ফ্রাঁ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
উল্লেখ্য, এই আইনটি ২০২১ সালের গণভোটে পাস হয়, যেখানে ৫১.২ শতাংশ ভোটার বোরকা নিষিদ্ধের পক্ষে মত দেন। যদিও শুরুতে এটি ‘উগ্র ইসলাম’ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, পরে আইনটি সংশোধন করে মূলত জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে গ্রহণ করা হয়।