সময় যত এগোচ্ছে, প্রযুক্তির উন্নতি সাধারণ মানুষের জীবনে আরও গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। আর কলকাতার ব্যস্ত জীবনে মেট্রোর গুরুত্ব এখন অপরিসীম। শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে কলকাতা মেট্রো (Kolkata Metro) ক্রমেই কলকাতার লাইফলাইন হয়ে উঠেছে। দেশে মেট্রোরেল পরিষেবা শুরুর ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সবসময়ই অগ্রগামী থেকেছে। যাত্রীদের আরও ভালো পরিষেবা দেওয়ার জন্য কলকাতা মেট্রো একের পর এক উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন করে চলেছে।
এই মুহূর্তে কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা দুটি দফায় চালু রয়েছে—একটি শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত, আর অন্যটি হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। এর মধ্যে শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত সংযোগকারী অংশের কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি বছরের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে এই রুটেও মেট্রো চলাচল শুরু হবে। কিন্তু তার আগেই কলকাতা মেট্রো পরিষেবা নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবারের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে। যার প্রভাব সরাসরি পড়তে পারে নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট মেট্রো প্রকল্পের অগ্রগতিতে!
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে নিউ গড়িয়া-এয়ারপোর্ট মেট্রো করিডরের নির্মাণকাজের জন্য ১,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। পরের বছর, অর্থাৎ ২০২৪-২৫ বাজেটে এই পরিমাণ বাড়িয়ে ১,৭৫০ কোটি টাকা করা হয়। সব মিলিয়ে প্রকল্পের জন্য মোট ১,৭৯১.৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এবার এক ধাক্কায় ৫৩.৫৪% বাজেট ছাঁটাই করা হয়েছে! সংশোধিত বরাদ্দ কমিয়ে আনা হয়েছে ১,৫৫০ কোটিতে। এই সিদ্ধান্তে প্রকল্পের গতি কতটা প্রভাবিত হবে, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে, বেশ ভালো খবর এসেছে জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো করিডরের জন্য। চলতি বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে। ২০২৩ সালের বাজেটে ২,৫৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, কিন্তু ২০২৪ সালের বাজেটে তা কমিয়ে ১,২০৮.৬১ কোটি টাকা করা হয়েছিল, আর পরে সংশোধিত তালিকায় সেটি ৮৫০ কোটি টাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি একেবারে আলাদা! তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বরাদ্দ বেড়েছে জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো প্রকল্পের জন্য। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে এবার ৯১৪.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা প্রকল্পটির জন্য একটা বড় সুবিধা হতে পারে।