অক্ষয় তৃতীয়া আর বিয়ের মরসুম একেবারে দরজায় কড়া নাড়ছে। এই সময়টা বাঙালির কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ—একদিকে শুভ দিন, আরেকদিকে সোনার গয়না ছাড়া তো বিয়ে কল্পনাই করা যায় না! কিন্তু তারই মাঝে একটা দুঃসংবাদ অনেকের কপালে ভাঁজ ফেলেছে—সোনার দাম লাফিয়ে লাখ টাকার ঘরে পৌঁছে গিয়েছে!
ভাবাই যাচ্ছে না, এই দামে এক-দু গ্রাম সোনা কিনতেও এখন দু’বার ভাবতে হচ্ছে। ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স আর মানিব্যাগ যেন চুপচাপ জবাব দিয়ে দিচ্ছে—“এতটা পারব না ভাই!”
তবু অক্ষয় তৃতীয়ার মত শুভ দিনে অনেকেই নিয়ম করে সোনা কেনেন। সেটা যতটুকুই হোক না কেন, একটা জিনিস কিন্তু মাথায় রাখতে হবে—সোনার বিশুদ্ধতা নিয়ে কোনও আপস নয়! কারণ দাম যেমনই হোক, ঠকে গেলে কিন্তু আফসোসই থাকবে।
তাহলে প্রশ্ন আসেই—কীভাবে বুঝবেন সোনা খাঁটি কি না?
চিন্তার কিছু নেই, আজকের এই লেখাটায় আমরা সেটা একদম সহজ করে বোঝাবো, যাতে আপনি নিশ্চিন্তে সোনা কিনতে পারেন।
সোনা চিনবেন কীভাবে?
সোনার বিশুদ্ধতা বুঝবেন কীভাবে?
ভারতে সোনার বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হল BIS হলমার্কিং। ভারতীয় মান ব্যুরো (BIS)-এর এই চিহ্নটি বিশুদ্ধতার একটি সরকারী গ্যারান্টি। সরকার ২০২১ সালের জুন থেকে এটি বাধ্যতামূলক করেছে। বিআইএস হলমার্কিংয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে – বিআইএসের ত্রিভুজাকার লোগো, সোনার বিশুদ্ধতা (ক্যারেট বা শতাংশে), গয়না প্রস্তুতকারকের পরিচয়। মনে রাখবেন যে কিছু দোকানদার জাল হলমার্কিং ব্যবহার করতে পারে। যদি চিহ্নগুলি অস্পষ্ট থাকে বা তথ্য অসম্পূর্ণ থাকে, তাহলে ভুলেও সেই দোকান থেকে সোনা কিনবেন না।
ক্যারটের মাধ্যমে আসল সোনা চিনুন
২৪ ক্যারেট সোনা মানেই তো সবচেয়ে খাঁটি, তাহলে সবাই এটা দিয়ে গয়না বানায় না কেন?” — অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন আসতে পারে।
আসলে, ২৪ ক্যারেট সোনা প্রায় ৯৯.৯% খাঁটি ঠিকই, কিন্তু সেটাই তো সমস্যা! এই সোনা এতটাই নরম যে তা দিয়ে গয়না তৈরি করলে সেটি খুব তাড়াতাড়ি বেঁকে যাবে বা ঘষায় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই এই খাঁটি সোনাকে মূলত ব্যবহার করা হয় সোনার মুদ্রা বা গল্ড বার বানাতে।
অন্যদিকে, ২২ ক্যারেট সোনা হচ্ছে সেই সোনার ধরন যেটা দিয়ে আমরা সাধারণত গয়না বানাতে দেখি। এতে প্রায় ৯১.৬% সোনা থাকে, আর বাকি অংশে একটু অন্য ধাতু (যেমন তামা বা রূপো) মেশানো হয়, যাতে সোনাটা কিছুটা শক্ত হয়।
বাড়িতে খাঁটি সোনা চিনবেন কীভাবে?
🟡 ভিনেগার টেস্ট
প্রায় সব গৃহস্থ বাড়িতেই ভিনেগার থাকে, তাই এটি সবচেয়ে সহজ উপায়। সোনার গয়নার উপর কয়েক ফোঁটা ভিনেগার দিন। যদি রঙ একদম বদলায় না, বুঝবেন সোনা আসল। কিন্তু যদি সেটি কালচে হয়ে যায়, তাহলে সেটা নকল সোনা।
💧 জল টেস্ট
একটি পাত্রে জল নিন এবং আপনার সোনার গয়নাটি তাতে ফেলুন। যদি গয়নাটি ডুবে যায়, সেটি আসল সোনা। কিন্তু যদি সেটা ভেসে উঠে, তাহলে বুঝবেন সেটি নকল। কারণ, আসল সোনা অনেক ভারী হয়।
🧱 সিরামিক টেস্ট
যদি আপনার কাছে কোনো আনগ্লেজড (অপলিশ করা) সিরামিক টাইলস থাকে, তাহলে সেটির উপর আপনার সোনার টুকরোটি ঘষে দেখুন। যদি ঘষার ফলে সোনালী রঙের দাগ পড়ে, তাহলে সেটা আসল সোনা। আর যদি কালো দাগ পড়ে, তাহলে সেটা নকল।
🧲 চুম্বক টেস্ট
সোনার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি চুম্বকের প্রতি আকৃষ্ট হয় না। তাই সোনার গয়না একটি চুম্বকের কাছে ধরুন— যদি সেটি চুম্বকে লেগে যায়, বুঝে নিন সেটা খাঁটি সোনা নয়।
এইসব ছোট ছোট ঘরোয়া কৌশল ব্যবহার করে আপনি নিজেরাই যাচাই করে নিতে পারবেন আপনার সোনার খাঁটি কিনা। তবে একেবারে নিশ্চিত হতে চাইলে, জুয়েলারি শপে গিয়ে প্রফেশনাল টেস্ট করিয়ে নেওয়াই ভালো।
গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য | Join Group |
চাকরির খবরের জন্য | Join JKNEWS24 Jobs |
রাশিফলের জন্য | Join NEWS24 |
খেলার খবরের জন্য | Join Whatsapp |