আবহাওয়া আইপিএল-2025 টাকা পয়সা পশ্চিমবঙ্গ ভারত ব্যবসা চাকরি রাশিফল স্বাস্থ্য প্রযুক্তি লাইফস্টাইল শেয়ার বাজার অন্যান্য

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নিখোঁজ বিমান উদ্ধার: ৮ দশক পর রহস্যের পর্দা ফাঁস

Published : April 7, 2025

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪৩ সালের ডিসেম্বর মাসে নাৎসি বাহিনীর হামলায় ভূপাতিত একটি বোমারু বিমানের সন্ধান অবশেষে পাওয়া গেছে। দীর্ঘ ৮২ বছর ধরে যে যুদ্ধবিমানটি নিখোঁজ ছিল, অবশেষে তার খোঁজ মেলায় এক ঐতিহাসিক রহস্যের পর্দা ফাঁস হলো। শুধু ইতিহাসের জন্যই নয়, বরং যারা এই বিমানে থাকা প্রিয়জনদের হারিয়েছিলেন, তাদের জন্য এটি এক ভিন্ন রকম স্বস্তি এনে দিয়েছে।

এই খবরটি প্রথম প্রকাশ করেছে এনডিটিভি, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো-এর একটি প্রতিবেদনের বরাতে। সেখানে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিধ্বস্ত হওয়া এই যুদ্ধবিমানটি ছিল রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান এয়ার ফোর্সের। বিমানে ছিলেন তিনজন ক্রু—তাঁরা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল গ্রিসের আন্টিকিথেরা দ্বীপের উপকূলে।

‘বাল্টিমোর এফডব্লিউ২৮২’ নামক এই বিমানটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পায় গ্রিসে গভীর সমুদ্র অনুসন্ধানকারী দল এজিনটেক, যারা পানির গভীরে ডুবে থাকা জাহাজ ও উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করতে বিশেষভাবে দক্ষ। তারা গত বছর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬১ মিটার গভীরে যুদ্ধযানটির ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করে।

এজিনটেক বিমানটির ছবি ও তথ্য নিয়ে হিস্টরি অ্যান্ড হেরিটেজ- এয়ারফোর্স-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরবর্তীতে তারা নিশ্চিত করে যে এটি রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান এয়ার ফোর্সের-এর ‘বাল্টিমোর এফডব্লিউ২৮২’।

অস্ট্রেলিয়ান বিমানবাহিনীর প্রধান, এয়ার মার্শাল স্টিফেন চ্যাপেল আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “আমরা রয়্যাল এয়ার ফোর্স এবং রয়্যাল নিউজিল্যান্ড এয়ার ফোর্স-এর সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে এই আবিষ্কার প্রকাশ করতে পেরে গর্বিত। সেই সঙ্গে তিন জাতির এই সাহসী বিমানচালকদের সম্মান জানাতেও আমরা গর্ব অনুভব করছি।”

বাল্টিমোর বিমানটির কী হয়েছিল?

অস্ট্রেলিয়ার ৪৫৪ নম্বর স্কোয়াড্রনের পরিচালিত এই বোমারু বিমানটি এজিয়ান সাগরে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশন শেষ করে ঘাঁটিতে ফেরার পথে ভয়ংকর বিপদের মুখে পড়ে। নাৎসি জার্মান বাহিনীর একটি ফাইটার বিমান হঠাৎ করে আক্রমণ চালায়। সেই হামলায় যুদ্ধবিমানটি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সে দিন নাৎসি হামলার সেই ভয়াবহ ঘটনায় প্রাণ হারান তিন সাহসী যোদ্ধা—ব্রিটিশ বিমানচালক লেসলি নরম্যান রো, অস্ট্রেলিয়ান পাইলট অফিসার কলিন ওয়াকার এবং নিউজিল্যান্ডের ওয়ারেন্ট অফিসার জন গার্টসাইড। তারা কেউই আর ফিরে যেতে পারেননি তাদের প্রিয় স্বজনদের কাছে। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান অস্ট্রেলিয়ান পাইলট উইলিয়াম অ্যালরয় হিউ হর্সলে। কিন্তু তাঁর যাত্রাও সহজ ছিল না। তিনি ধরা পড়েন শত্রুপক্ষের হাতে এবং যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বন্দী অবস্থায় কাটাতে হয় তাঁকে।

মুক্তির পর হর্সলে জানান, কীভাবে তাদের বিমানকে আক্রমণ করা হয়েছিল। ‘মি-১০৯ যুদ্ধবিমান সাতবার আক্রমণ চালায়, যার ফলে বিমানটির বাম দিকের ডানায় আগুন ধরে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ধ্বংস হয়ে যায় এবং পাইলট অফিসার ওয়াকার এবং ওয়ারেন্ট অফিসার গার্টসাইড আহত হন। তবে ঠিক কী পরিমাণে, তা আমি জানি না।’

Join WhatsApp

Join Now

Leave a Comment