দীর্ঘ যৌবন প্রাপ্তি:রোজের কিছু ভাল অভ্যাস আমাদের স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দিতে পারে। কী কী অভ্যাস সুনিশ্চিত করতে পারে ভাল থাকা?
দীর্ঘ যৌবন প্রাপ্তি হবে মাত্র তিন দৈনিক অভ্যাসে: দীর্ঘ যৌবন এবং সুস্থ দীর্ঘায়ু তো আমাদের সবারই কামনা। তবে কীভাবে তা সম্ভব? ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের ৭৮ বছর বয়সী চিফ ওয়েলনেস অফিসার, চিকিৎসক মাইকেল রাইজেনের জীবনে এটাই বাস্তব। তিনি নিজেই জানিয়েছেন যে সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের মাধ্যমে তার জৈবিক বয়স কার্যত ২০ বছর পিছিয়ে দিয়েছেন! চিকিৎসা রিপোর্ট অনুযায়ী, তার জৈবিক বয়স এখন মাত্র ৫৭.৬ বছর। এর পেছনের রহস্য? স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন—এই তিনটি বিষয় তার দীর্ঘ যৌবনের চাবিকাঠি।
লেখক এবং দীর্ঘায়ু নিয়ে গবেষণায় নিবেদিত চিকিৎসক মাইকেল রোইজেনের মতে, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে আমাদের দৈনিক কিছু সহজ অভ্যাসের মধ্যে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এমন কিছু অভ্যাসের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যেগুলো নিয়মিত মেনে চললে সুস্বাস্থ্য শুধু অর্জনই নয়, তা ধরে রাখাও সহজ হয়ে যায়। নিজের শরীর এবং মন ভালো রাখার জন্য এসব অভ্যাসকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে তোলাই হলো মূল চাবিকাঠি।
হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া
স্বাস্থ্য সচেতনতার অভ্যাসগুলো মূলত একটি সাধারণ ধারণাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়, আর তা হলো কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম। এই ধরনের ব্যায়াম হৃদ্যন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। নিয়মিত ট্রেডমিল ব্যবহার করলে এ ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়। পাশাপাশি, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, হাঁটা বা জগিংয়ের মতো আরও বিভিন্ন কার্ডিও ব্যায়াম প্রতিদিনের অভ্যাসে নিয়ে আসা যায়। এগুলো হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে দারুণ কার্যকর।
নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করুন
প্রতিদিন অন্তত ১০,০০০ পা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত গতিতে হাঁটতে পারলে এর উপকারিতা আরও বেশি। এই অভ্যাস হৃদ্রোগ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়। শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, মানসিক উদ্বেগ কমাতেও নিয়মিত হাঁটা দারুণ কার্যকর। তাই সময় বের করে একটু হাঁটার চেষ্টা করুন—আপনার শরীর ও মন দুটিই ভালো থাকবে!
পেশীর যত্ন করুন
সপ্তাহে অন্তত দু’বার ভারী ওজন উত্তোলনের ব্যায়াম করলে শরীরের জন্য বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য উপকার পাওয়া যায়। এটি শুধু পেশির জোর বাড়ায় না, হাড়ের শক্তিও বৃদ্ধি করে। ২০২২ সালে ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা এই ধারণাকে সমর্থন করেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, সপ্তাহে ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের প্রতিরোধমূলক ব্যায়াম, যেমন ওজন উত্তোলন, মৃত্যুর ঝুঁকি ১৭% পর্যন্ত কমাতে পারে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি ১৮% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। এটি শুধু শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সাহায্য করে।