এক পলকে মানুষ প্রথমে যা দেখে, তা হলো চোখ, নাক—এরপরেই ঠোঁট। আর ঠোঁটই কিন্তু মুখের সৌন্দর্যে একটা আলাদা জায়গা দখল করে আছে। কারণ, ঠোঁটের একটুকরো হাসিতে কত হৃদয় যে গলে যায়! কিন্তু ধূমপান, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া বা ঠোঁটের যত্ন না নেওয়ার কারণে অনেকের ঠোঁট সুন্দর হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কালচে হয়ে পড়ে। তবে চিন্তার কিছু নেই! ঘরোয়া কিছু প্রাকৃতিক উপায়েই আবার ঠোঁটকে ফিরিয়ে আনা যায় তার গোলাপি রঙে।
প্রাকৃতিক উপায়ে ঠোঁট গোলাপি করুন
মধু থেরাপি: প্রাকৃতিক উপায়ে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করার যত উপায় আছে মধু থেরাপি সবচেয়ে বেশি কার্যকর। মধু এমন এক প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বককে উজ্জ্বল করে। ঠোঁটের ত্বকও এর ব্যতিক্রম নয়। মধু আপনার ঠোঁট থেকে কালচেভাব দূর করার সঙ্গে সঙ্গে ঠোঁটকে কোমল করে তোলে। রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য একটু মধু নিয়ে সারা রাত ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। প্রতিদিন শোবার পূর্বে ঠোঁটে মধু লাগান। কয়েক সপ্তাহ পরই দেখবেন ঠোঁটের কালচেভাব দূর হতে শুরু করেছে।
লেবুর রস: ঠোঁটের স্বাভাবিক রং হারিয়ে ফেলে অনেকেই চিন্তায় পড়ে যান। অথচ হাতের কাছেই আছে একেবারে সহজ ও কার্যকরী সমাধান—লেবুর রস।
লেবুতে থাকে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান, যা ঠোঁটের কালচেভাব দূর করতে দারুণ কাজ করে। কীভাবে ব্যবহার করবেন? রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক টুকরো লেবু নিয়ে একটু রস চিপে নিন। এবার ঠোঁটে হালকা করে ম্যাসেজ করুন। ব্যস! এই ছোট্ট কাজটা যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন করতে পারেন, তাহলে কয়েক দিনের মধ্যেই দেখবেন—ঠোঁট আগের চেয়ে অনেকটা ফর্সা আর প্রাণবন্ত দেখাচ্ছে।
চিনি থেরাপি: চিনি শুধু রান্নাঘরের জিনিস নয়, প্রাকৃতিক স্ক্রাবার হিসেবেও এর ব্যবহার দারুণ কার্যকর! বিশেষ করে ঠোঁটের যত্নে এটা হতে পারে আপনার সহজ কিন্তু দারুণ এক সমাধান। ঠোঁটে চিনি দিয়ে স্ক্রাব করলে শুধু যে কালচেভাব কমে, তা নয়—একসঙ্গে দূর হয় জমে থাকা মরা চামড়াও।
ভাবছেন কীভাবে করবেন? খুব সহজ! তিন চামচ চিনি আর দুই চামচ বাটার একসঙ্গে মিশিয়ে নিন – ব্যাস, তৈরি আপনার ঘরোয়া ঠোঁট স্ক্রাব। এই পেস্টটি সপ্তাহে অন্তত দুবার ব্যবহার করুন। আলতোভাবে ঠোঁটে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন।
বরফ থেরাপি: অনেকেই জানেন না, বরফের ছোট্ট একটা টুকরো কিন্তু ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে বেশ জাদুর মতো কাজ করে! ভাবছেন কীভাবে? খুব সিম্পল—যে কোনো দাগের ওপর নিয়ম করে বরফ ঘষলে সেটা ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসে। একই নিয়ম ঠোঁটেও কাজে লাগে। প্রতিদিন ঠোঁটে এক টুকরো বরফ আলতো করে ঘষে নিন। এতে ঠোঁটের কালচেভাব ধীরে ধীরে কমে যাবে। শুধু তাই নয়, বরফ ঠোঁটের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে, ফলে ঠোঁট আর রুক্ষও হয় না।
দুধের সর: দুধের সরের মাধ্যমে ঠোঁটের গোলাপি আভা ধরে রাখার এই পদ্ধতিটি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। প্রাচীন যুগে রানিরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনিও ঠোঁটের দ্যুতি ফিরে পেতে পারেন। দুধের সরে মধু মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। দিনে বেশ কয়েকবার ব্যবহারে কিছু দিনের মধ্যেই আপনার ঠোঁটে গোলাপি আভা ফিরবে।