সারা দিন শুধু ঘুম পায় কি করবো: আপনার কি সব সময় ক্লান্ত লাগে? সারাদিন ঘুমানোর ইচ্ছা হয়? চিন্তা করবেন না, আপনি একা নন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের একজন সপ্তাহে অন্তত তিন দিন দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি শুধু আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দিতে পারে, এটি কখনো কখনো শারীরিক বা মানসিক কোনো সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে হেলাফেলা না করে, যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Table of Contents
অতিরিক্ত ঘুম কেন পায়?
অনেক সময় শারীরিক বা মানসিক সমস্যার কারণে অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে। যেমন, বিষণ্ণতা (ডিপ্রেশন) বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ দিনের বেলায় তন্দ্রা বা ঘুমের অনুভূতি তৈরি করতে পারে। এই ধরনের সমস্যা ঘুমের অভ্যাসে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। যদি আপনি রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে না পারেন, তবে শরীর দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুমানোর চেষ্টা করে। হাইপারসোমনিয়া (অতিরিক্ত ঘুম) বা স্লিপ অ্যাপনিয়া (ঘুমের সমস্যা) নামক ঘুমের রোগও অতিরিক্ত ঘুমের কারণ হতে পারে।
সারা দিন শুধু ঘুম পায় কি করবো
সারাক্ষণ ঘুম পাওয়ার সমস্যাকে হাইপারসোমনিয়া বলা হয়। এই অবস্থায়, আপনি রাতে পর্যাপ্ত ঘুমালেও দিনের বেলা অতিরিক্ত তন্দ্রা অনুভব করেন, যার ফলে আপনার দৈনন্দিন জীবন এবং কাজকর্মে বাধা পড়তে পারে। এই সমস্যা অনেক কারণে হতে পারে, যেমন অতিরিক্ত মদ্যপান, মানসিক চাপ, অথবা বিষণ্ণতা। হাইপারসোমনিয়ায় ভোগা মানুষ মাঝে মাঝে ঘুম থেকে মুক্তি পেতে বেশি চা বা কফি খেতে শুরু করেন, যা তাদের আরও শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। অপর্যাপ্ত ঘুম ক্লান্তির অন্যতম সাধারণ কারণ। মানসিক চাপ, শারীরিক অসুস্থতা বা পরিবেশের পরিবর্তনও ঘুমের মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে অনেক সময় নিদ্রাহীন রাত কাটাতে হয়। যদি আপনি ইনসমনিয়ায় ভুগে থাকেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু পুষ্টির অভাব, যেমন আয়রন, ভিটামিন বি১২ বা ডি, ক্লান্তির কারণ হতে পারে। এছাড়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপও ক্লান্তি তৈরি করতে পারে। তাই নিজের জন্য কিছু সময় বের করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনেক শারীরিক রোগও ক্লান্তির সঙ্গে যুক্ত থাকে, যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম, ক্যানসার, ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, কিডনি রোগ, বিষণ্নতা, ডায়াবেটিস এবং ফাইব্রোমায়ালজিয়া। যদি দীর্ঘ সময় ধরে ক্লান্তি অনুভব করেন। তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত।
মুক্তি পেতে করণীয়
- জাঙ্কফুড এড়িয়ে চলুন: চিপস, ফাস্টফুড এবং অতিরিক্ত মিষ্টি খাবারের বদলে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন, যা শরীরের জন্য উপকারী।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন: পুষ্টিকর খাবার যেমন ফল, সবজি, প্রোটিন এবং ভালো চর্বি গ্রহণ করুন। এসব আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাবে।
- নিয়মিত শরীরচর্চা করুন: প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম বা হাঁটাচলার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি আপনার মেটাবলিজম বাড়াবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- মদ ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন: মদ্যপান এবং ধূমপান আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তাই এগুলি পরিহার করুন।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিন: ভালো ঘুম শরীরের সঠিক কাজকর্ম নিশ্চিত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
এতেও যদি না কমে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।